বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। সূর্যমুখী ক্ষেত ফুলে ফুলে ভরে গেছে। দেখে মনে হচ্ছে ফসলের মাঠ জুড়ে হাসছে সূর্যমুখী ফুল। এরই মধ্যে সূর্যমুখীর হাসিতে ভাল ফলনের স্বপ্ন দেখছে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সারাবিশ্বে সূর্যমুখী তেলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী চাষ শুরু হয়েছে। সে লক্ষ্যে কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কৃষককে সার ও বীজ বিতরণের মাধ্যমে এবার নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৫৪ হেক্টর জমিতে আরডি এস জাতের সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। সূর্যমুখী চাষ করে শুরুতেই সফলতার মুখ দেখছেন কৃষকরা। যদি কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে সুর্যমুখী চাষ করে দ্বিগুণ তিনগুণ লাভ করতে পারবেন। ফলে একদিকে উপকৃত হবে অপর দিকে মিটবে সূর্যমুখী তেলের চাহিদা।
নিতাই ইউনিয়নের খোলাহাটি গ্রামের কৃষক গৌসুল আজম বলেন, আমি উপজেলা কৃষি অফিসের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বদরুল আলমের পরামর্শে ৩০ শতক জমিতে সূর্যমুখী ফুল চাষ করেছি। সূর্যমুখীর বীজ সার সব কিছু সরকারীভাবেই পেয়েছি। বর্তমানে আমার সূর্যমুখী ক্ষেত ফুলে ফুলে ভরে গেছে। যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে সূর্যমুখী চাষ করে কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাবে।
সূর্যমুখী ফুলের বিভিন্ন রোগ-বালাই দমনে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের গ্রামের চাষি শামীম হোসেন জানান, আমি কৃষি অফিসের পরামর্শে এবং কৃষি পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় সূর্যমুখীর বীজ ও সার পেয়ে একবিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করি। বর্তমানে সুর্যমুখী ক্ষেতে ফুল আসতে শুরু করেছে। এমন পরিবেশে সূর্যমুখী ফুল অনেকের দৃষ্টি কেড়েছে। অনেকেই সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। আবার অনেকেই ক্ষেতে ছবি তুলে ফেসবুকে ছবি পোষ্ট করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, সূর্যমুখী অতিপরিচিত একটি ফুল। এর তেল গুনে ও মানে অতুলনীয়। সারাবিশ্বে এর ব্যাপক চাহিদা থেকে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখীর চাষ শুরু হয়। এ উপজেলার জমি সূর্যমুখী চাষের জন্য উপযোগী মনে হওয়ায় নীলফামারী কৃষি দপ্তরের সহযোগিতায় এবার প্রথম ৪০৬ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে সূর্যমুখী ক্ষেতের যে অবস্থা তাতে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছে কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী গাছ লম্বায় ৩ মিটার হয়ে থাকে, ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। এই ফুল দেখতে সূর্যের মত হওয়ায় এর নাম সূর্যমুখী ফুল।