ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জে পতিত জমিতে ভাসমান বেডে সবজি চাষে ঝুকছে কৃষক

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ প্রকল্পটির মূল উদ্যেশ্য হল যেসমস্ত এলাকায় সারাবছর পানি থাকে এবং কচুরিপানা থাকে সে সমস্ত এলাকাকে চাষের আওতায় আনা। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট এর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ উপকেন্দ্র কিশোরগঞ্জ কার্যালয়ে এ প্রকল্পটি চালু আছে। এ প্রকল্পের অধীনে কিশোরগঞ্জ সদর,নিকলী এবং করিমগঞ্জ উপজেলায় ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ শুরু হয়েছে। বর্তমানে কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট সংলগ্ন স্থানে করলা,মিষ্টি কুমড়া,লাউ,টমেটো,বেগুন,পেয়াজ,মরিচ এবং ফুল ভাসমান বেডে চাষ করা হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের বারী হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়া-২ যেটা দেখতে অত্যন্ত সুন্দর ফ্যামিলি সাইজের। এর চাহিদা মানুষের কাছে ব্যাপক। এর ওজন ২-৩ কেজির মধ্যে হয়।ফলন প্রায় ২৫-৩০ টনের কাছাকাছি। এখানে দেখা যায় চাষাবাদে ব্যাপক ফলন হয়েছে। এতে কোন কিটনাশক দেয়া হয় না। পোকামাকড় থেকে ফসল রক্ষার্থে ফাদ ব্যাবহার করা হয়। এবং সারের ব্যাবহার নেই বললেই চলে। পচা কচুরিপানা এখানে সার হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে।


কিশোরগঞ্জ পাট গবেষনা আঞ্চলিক কেন্দ্রের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান,’আমরা বারী হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়া-২ ভাসমান বেডে চাষ করেছি। চমৎকার ফলন হয়েছে,আশা করছি কাঙ্খিত ফলন আমরা পাব।
আমরা ইতিমধ্যেই বেগুন এবং টমেটো হার্ভেস্ট করেছি। এর আগে করলা এবং লাউ হার্ভেস্ট করেছি। আমরা আশা করছি ভাসমান বেডে চাষাবাদ ধীরে ধীরে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়বে। যেসমস্ত জলজ জায়গায় মানুষ কোন কিছু চাষ করতে পারে না সেসমস্ত জায়গায় আমাদের ভাসমান বেডে চাষাবাদ দেখে মানুষ উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। এ পর্যন্ত জেলার প্রায় ৫০ জনের মত কৃষক ভাসমান বেডে সবজি চাষ করছে। ড.মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরো জানান,প্রথমে এ চাষাবাদ সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় কৃষকদের কাছ থেকে তেমন সাড়া পাওয়া যায় নি। তারপর আমরা কৃষকদের ট্রেনিং এবং মাঠ দিবসের মাধম্যে ভাসমান বেডে সবজি চাষ সম্পর্কে বুঝানোর পর ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।ইতিমধ্যে সদর উপজেলার রশিদাবাদ,লতিফাবাদ,মহিনন্দ, করিমগঞ্জের সাতারপুর, পাঠানপাড়া এলাকার কৃষকরা ভাসমান বেডে সবজি চাষ করে সাফল্যজনক অবস্থায় আছে।তিনি আরো জানান,ভাসমান বেডে সবজি চাষ সম্পূর্ণ ঝুকিমূক্ত। কারন বন্যা হলেও এটা পানিতে ডুবে না। ভাসমান বেড তাই ভেসেই থাকে। বর্ষাকালে যখন কোন সবজি চাষের সুযোগ থাকে না তখনো ভাসমান বেডে সবজি চাষ করা যায়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

কিশোরগঞ্জে পতিত জমিতে ভাসমান বেডে সবজি চাষে ঝুকছে কৃষক

আপডেট টাইম : ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ মার্চ ২০২১

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ প্রকল্পটির মূল উদ্যেশ্য হল যেসমস্ত এলাকায় সারাবছর পানি থাকে এবং কচুরিপানা থাকে সে সমস্ত এলাকাকে চাষের আওতায় আনা। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট এর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ উপকেন্দ্র কিশোরগঞ্জ কার্যালয়ে এ প্রকল্পটি চালু আছে। এ প্রকল্পের অধীনে কিশোরগঞ্জ সদর,নিকলী এবং করিমগঞ্জ উপজেলায় ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ শুরু হয়েছে। বর্তমানে কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট সংলগ্ন স্থানে করলা,মিষ্টি কুমড়া,লাউ,টমেটো,বেগুন,পেয়াজ,মরিচ এবং ফুল ভাসমান বেডে চাষ করা হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের বারী হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়া-২ যেটা দেখতে অত্যন্ত সুন্দর ফ্যামিলি সাইজের। এর চাহিদা মানুষের কাছে ব্যাপক। এর ওজন ২-৩ কেজির মধ্যে হয়।ফলন প্রায় ২৫-৩০ টনের কাছাকাছি। এখানে দেখা যায় চাষাবাদে ব্যাপক ফলন হয়েছে। এতে কোন কিটনাশক দেয়া হয় না। পোকামাকড় থেকে ফসল রক্ষার্থে ফাদ ব্যাবহার করা হয়। এবং সারের ব্যাবহার নেই বললেই চলে। পচা কচুরিপানা এখানে সার হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে।


কিশোরগঞ্জ পাট গবেষনা আঞ্চলিক কেন্দ্রের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান,’আমরা বারী হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়া-২ ভাসমান বেডে চাষ করেছি। চমৎকার ফলন হয়েছে,আশা করছি কাঙ্খিত ফলন আমরা পাব।
আমরা ইতিমধ্যেই বেগুন এবং টমেটো হার্ভেস্ট করেছি। এর আগে করলা এবং লাউ হার্ভেস্ট করেছি। আমরা আশা করছি ভাসমান বেডে চাষাবাদ ধীরে ধীরে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়বে। যেসমস্ত জলজ জায়গায় মানুষ কোন কিছু চাষ করতে পারে না সেসমস্ত জায়গায় আমাদের ভাসমান বেডে চাষাবাদ দেখে মানুষ উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। এ পর্যন্ত জেলার প্রায় ৫০ জনের মত কৃষক ভাসমান বেডে সবজি চাষ করছে। ড.মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরো জানান,প্রথমে এ চাষাবাদ সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় কৃষকদের কাছ থেকে তেমন সাড়া পাওয়া যায় নি। তারপর আমরা কৃষকদের ট্রেনিং এবং মাঠ দিবসের মাধম্যে ভাসমান বেডে সবজি চাষ সম্পর্কে বুঝানোর পর ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।ইতিমধ্যে সদর উপজেলার রশিদাবাদ,লতিফাবাদ,মহিনন্দ, করিমগঞ্জের সাতারপুর, পাঠানপাড়া এলাকার কৃষকরা ভাসমান বেডে সবজি চাষ করে সাফল্যজনক অবস্থায় আছে।তিনি আরো জানান,ভাসমান বেডে সবজি চাষ সম্পূর্ণ ঝুকিমূক্ত। কারন বন্যা হলেও এটা পানিতে ডুবে না। ভাসমান বেড তাই ভেসেই থাকে। বর্ষাকালে যখন কোন সবজি চাষের সুযোগ থাকে না তখনো ভাসমান বেডে সবজি চাষ করা যায়।