জীবনাচরণ সম্পর্কে জানতে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে আরও একটি কুমিরের পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে সুন্দরবনের খালে ছাড়া হয়েছে। রোববার বিকালে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের চরাপুটিয়া এলাকায় খালে এ কুমিরটি অবমুক্ত করা হয়।
সুন্দরবন বিভাগ জানায়, কুমিরের জীবনাচরণ ও গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে জানতে একটি কুমিরের পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে খালে অবমুক্ত করায় সুন্দরবনের নদীতে কুমিরের চলাচল ও অবমুক্ত করা কুমিরের বেঁচে থাকা সম্পর্কে জানা যাবে। বন বিভাগ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোটের (আইইউসিএন) সহযোগিতায় এর আগে ২০২৪ এর মার্চ মাসে সুন্দরবনের নদী-খালে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে ৪টি কুমির অবমুক্ত করা হয়। এবারের অবমুক্ত করা কুমিরটির জন্ম ও বেড়ে ওঠা বন বিভাগের মোংলা করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে। এর বয়স ১২ বছর। প্রায় ২০ কেজি ওজনের স্ত্রী কুমিরটি সুন্দরবনে ছাড়ার পর থেকেই তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
করমজল বন্য প্রাণী প্রজননকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, গবেষণার মাধ্যমে কুমির কোথায় যাচ্ছে, কুমিরের জীবনাচরণ ও খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে জানা যাবে। বর্তমানে বাংলাদেশে কেবল সুন্দরবন এলাকাতেই প্রাকৃতিক পরিবেশে লোনা পানির কুমির দেখা যায়। লোনাপানির কুমিরের এই প্রজাতির প্রজনন খুব একটা হচ্ছে না। প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএনের তালিকায় লোনা পানির কুমিরকে বাংলাদেশে বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এই কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও লালন-পালনের জন্য ২০০০ সালে সুন্দরবনের করমজলে বন বিভাগের উদ্যোগে কুমির প্রজননকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। অবমুক্ত করা কুমিরটি এ কেন্দ্রেই লালন-পালন করা। এর আগে ২০২৪ সালের ১৩ থেকে ১৬ মার্চ সুন্দরবনে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে ছাড়া চারটি কুমিরের মধ্যে দুটি ছিল পুরুষ ও দুটি স্ত্রী।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ওই কুমিরগুলো অবমুক্তের এক মাসের কাছাকাছি সময়ে একটি কুমির প্রায় ১৫০ কিলোমিটার এলাকা ঘুরেছিল এবং সুন্দরবন এলাকার বাইরে চলে যায়। প্রায় এক মাস পর ১২ এপ্রিল রাতে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ শৈলদাহ গ্রামের পুকুর থেকে উদ্ধার করে আবার সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়। অবমুক্ত করা ৪টি কুমির এখনও সুন্দরবনের ভেতরে আছে বলে জানান বন কর্মকর্তা আজাদ কবির।