বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ একটি ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) কোম্পানির সার্ভারে ম্যালওয়্যার ভাইরাসের হামলার ঘটনা দেশে সাইবার আক্রমণের ব্যাপারে সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন এটি ধীরে ধীরে ছড়াতে পারে। এ কারণে এখন সংশ্লিষ্টদের আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে দেশের আর্থিক খাতের অনলাইন সিস্টেমে একটি ম্যালওয়্যার সফটওয়ার বা ভাইরাসের সন্ধান পায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। সঙ্গে সঙ্গে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এ ব্যাপারে সতর্ক পদক্ষেপ নেয়।
পাশাপাশি সীমিত করা হয় এটিএম বুথ ও অনলাইন লেনদেন। একইসঙ্গে আরোপ করা হয় বাড়তি সতর্কতা। শুধু বাংলাদেশের আর্থিক খাত নয়, বিশ্বব্যাপী আর্থিক খাতে সাইবার হামলা হতে পারে- যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) সাইবার ইউনিটের এমন এক সতর্কতা জারির পর বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়েছে সতর্ক অবস্থান।
দেশের আর্থিক খাতে সাইবার হামলার তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ছাড়াও ক্রেডিট-ডেবিট কার্ড জালিয়াতির বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে অতীতে। প্রযুক্তিগত উন্নতির কারণে গত দু’দশকে দেশের ব্যাংকিং কার্যক্রমে গুণগত পরিবর্তন এসেছে। অনলাইন ব্যাংকিং, এটিএম কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং ইত্যাদি সেবার মাধ্যমে ব্যাংকগুলো তাদের ব্যাংকিং সেবাকে গ্রাহকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে।
তবে দেখা যাচ্ছে, এসব ক্ষেত্রে নানা জালিয়াতি ও প্রতারণার ঘটনাও ঘটছে। এসব রোধে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছাড়াও প্রতিটি ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে সাইবার বিশেষজ্ঞ থাকা প্রয়োজন।
দেশে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে বিসিসি। সাইবার ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দেশের তিনটি ইন্টারনেট প্রটোকলে ম্যালওয়্যার ভাইরাসের অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। এখন জরুরি কাজ হল এ ভাইরাসটি অকেজো করে দেয়া।
এ লক্ষ্যে বিসিসির গাইডলাইন অনুযায়ী সবাইকে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি অপরিচিত, আকর্ষণীয় বা লোভনীয় অফার রয়েছে এমন কোনো ই-মেইল বা ফেসবুক বার্তায় ক্লিক না করার পরামর্শ দিয়েছে বিসিসি। কারণ এগুলোর মধ্যেই থাকতে পারে ভাইরাসটি, যা ক্লিক করলেই তা সচল হয়ে উঠবে এবং ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কোনো প্রতিষ্ঠানের অনলাইনে বা সিস্টেমসে এসব বার্তা দেখলে তা বিসিসিকে জানাতে বলা হয়েছে। আমরা আশা করব, আমাদের অভিজ্ঞ সাইবার বিশেষজ্ঞরা দ্রুতই ভাইরাসটি অকেজো করতে সক্ষম হবেন; আর যতদিন তা না হচ্ছে, ততদিন সংশ্লিষ্ট সবাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন।