ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোটা চালের দামও চড়া

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ মহামারী কমবেশি সব পেশার মানুষকেই অস্থির করে তুলেছে। এ অবস্থায় সবার প্রত্যাশা ছিল, অন্তত এ সময় বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে। কিন্তু লক্ষ করা যাচ্ছে, সিন্ডিকেটের কারসাজিতে প্রতি মাসেই দফায় দফায় বেড়েছে চালসহ নিত্যপণ্যের দাম।

নানা অজুহাতে চালের দাম বাড়িয়েছে মিলাররা। খুচরা বাজারে মোটা চালের কেজি এখন ৫২ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। গত তিন মাসে তারা মাঝারি ও সরু চালের দাম প্রতি বস্তায় বাড়িয়েছে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ।

আলু ভর্তা দিয়ে সামান্য ভাত খাবে, এখন সেই অবস্থাও নেই স্বল্প আয়ের মানুষের। প্রশ্ন হল, ধানের ভরা মৌসুমেও চালের বাজার অস্থির কেন? জানা গেছে, এখন মিল পর্যায়ে সরু চালের মধ্যে প্রতি বস্তা মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৩০০০ টাকায়, যা তিন মাস আগে বিক্রি হয়েছে ২৪০০ টাকায়। নিত্যপণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হলেই বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।

নিকট-অতীতে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। এ বছর দেশে কয়েক দফা বন্যা হয়েছে। এতে বিভিন্ন জেলার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সারা বছরের উৎপাদন ও চাহিদা তুলনা করলে স্পষ্ট হয়, দেশে আপাতত খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা নেই।

সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, আগামী জুন পর্যন্ত দেশে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পর কমপক্ষে ৩০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। এরপরও বারবার চালের বাজার অস্থির হওয়ার কারণ কী?

অতীতেও লক্ষ করা গেছে, ধানের বাম্পার ফলনের পর কারসাজি করে চালের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছে; কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজারদর বাড়ানো হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, চালের বাজার অস্থির হওয়ার জন্য মূলত কিছু অসাধু মিলার দায়ী। অসাধু ব্যক্তিরা মৌসুমে বিপুল পরিমাণ ধান কিনে মজুদ করে। বস্তুত এভাবেই চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়।

যারা এসব অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। এক্ষেত্রে বিলম্ব হলে বারবার চালের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই যায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া। এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, অসাধু ব্যবসায়ীদের ন্যূনতম মানবিকতা বলতে কিছু নেই।

সঠিকভাবে আইন প্রয়োগ করে বাজারে চলমান অস্থিরতা দূর করতে হবে। বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তদারকির সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় অসাধুদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

মোটা চালের দামও চড়া

আপডেট টাইম : ১২:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ মহামারী কমবেশি সব পেশার মানুষকেই অস্থির করে তুলেছে। এ অবস্থায় সবার প্রত্যাশা ছিল, অন্তত এ সময় বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে। কিন্তু লক্ষ করা যাচ্ছে, সিন্ডিকেটের কারসাজিতে প্রতি মাসেই দফায় দফায় বেড়েছে চালসহ নিত্যপণ্যের দাম।

নানা অজুহাতে চালের দাম বাড়িয়েছে মিলাররা। খুচরা বাজারে মোটা চালের কেজি এখন ৫২ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। গত তিন মাসে তারা মাঝারি ও সরু চালের দাম প্রতি বস্তায় বাড়িয়েছে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ।

আলু ভর্তা দিয়ে সামান্য ভাত খাবে, এখন সেই অবস্থাও নেই স্বল্প আয়ের মানুষের। প্রশ্ন হল, ধানের ভরা মৌসুমেও চালের বাজার অস্থির কেন? জানা গেছে, এখন মিল পর্যায়ে সরু চালের মধ্যে প্রতি বস্তা মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৩০০০ টাকায়, যা তিন মাস আগে বিক্রি হয়েছে ২৪০০ টাকায়। নিত্যপণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হলেই বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।

নিকট-অতীতে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। এ বছর দেশে কয়েক দফা বন্যা হয়েছে। এতে বিভিন্ন জেলার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সারা বছরের উৎপাদন ও চাহিদা তুলনা করলে স্পষ্ট হয়, দেশে আপাতত খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা নেই।

সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, আগামী জুন পর্যন্ত দেশে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পর কমপক্ষে ৩০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। এরপরও বারবার চালের বাজার অস্থির হওয়ার কারণ কী?

অতীতেও লক্ষ করা গেছে, ধানের বাম্পার ফলনের পর কারসাজি করে চালের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছে; কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজারদর বাড়ানো হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, চালের বাজার অস্থির হওয়ার জন্য মূলত কিছু অসাধু মিলার দায়ী। অসাধু ব্যক্তিরা মৌসুমে বিপুল পরিমাণ ধান কিনে মজুদ করে। বস্তুত এভাবেই চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়।

যারা এসব অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। এক্ষেত্রে বিলম্ব হলে বারবার চালের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই যায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া। এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, অসাধু ব্যবসায়ীদের ন্যূনতম মানবিকতা বলতে কিছু নেই।

সঠিকভাবে আইন প্রয়োগ করে বাজারে চলমান অস্থিরতা দূর করতে হবে। বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তদারকির সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় অসাধুদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।