বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ডেটলাইন এপ্রিল ১৯৭১। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে প্রচণ্ড শক্তি ও সাহস সঞ্চার করে। আমি তখন করাচিতে একটি বড় পদে কাজ করি-অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার। দেশি-বিদেশি উঁচু মাপের অতিথিদের প্রটোকলে প্রায়ই বিমানবন্দরের ভিআইপি রুমে যাই। ওখানকার পাঠান পরিচারক কালে খান আমাকে ভালোভাবেই চিনতেন। ৪ এপ্রিল ওই ভিআইপ কক্ষে যাচ্ছি দেখে তিনি দ্রুত আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন বড় সিঙ্গেল সোফাটির দিকে। জানালেন, আগের দিন ওই সোফায় বসে পাইপ টানছিলেন তুমহারা লিডার শেখ সাহাব। গম্ভীর মুখে একটি কথাও বলেননি। সেদিন আমি এবং কোটি বাঙালি খবরের কাগজে দুই সামরিক অফিসারবেষ্টিত সোফায় বসা বঙ্গবন্ধুর ছবি দেখে আশ্বস্ত হই যে নেতা বেঁচে আছেন। স্বাধীনতা আসবে।
২. একাত্তরের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে, বিশেষ করে ৪ এপ্রিল বাংলার স্বাধীনতার সূর্য উদয়ের একটি ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ ঘটনা ঘটে। তখন পর্যন্ত আমাদের বড় প্রতিবেশী দেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তেমন কিছু বলেনি। সম্ভবত নিজের উদ্যোগেই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ কয়েকজন সহকর্মীসহ নয়াদিল্লি যান। উদ্দেশ্য, প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে সাহায্য চাওয়া। ঘটনাচক্রে প্রফেসর রেহমান সোবহান ও প্রফেসর আনিসুর রহমানও একই উদ্দেশ্যে দিল্লিতে। খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বন্ধুত্ব কাজে লাগিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা শ্রী অশোক মিত্রের সাহায্য নেন। তিনি যোগাযোগ করিয়ে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শক্তিধর মুখ্য সচিব পিএন হাকসারের সঙ্গে। ৩ এপ্রিল রাতে তাজউদ্দীন সাহেব জানতে পারেন পরদিনই সাক্ষাৎকার। তবে তাকে বন্ধু-সুহৃদরা আগে থেকেই তৈরি করেছিলেন; তিনি যেন বলেন, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে ছ’দফার পক্ষে যে ম্যান্ডেট এসেছি, পাকিস্তানের সেনাশাসকরা তা অস্বীকার করায় স্বাধীনতা ঘোষণা করা ছাড়া উপায় ছিল না। বঙ্গবন্ধুকে সেনাশাসকরা গ্রেফতার করার ফলে তিনিই (তাজউদ্দীন) প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মন্ত্রিসভা গঠন করবেন। শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী এসব যুক্তি গ্রহণ করলেন। বাংলা ও বাঙালির নিঃস্বার্থ অসমসাহসী অবিসংবাদিত সম্মোহনী নেতৃত্বের অধিকারী বঙ্গবন্ধুর নামে, শানে ও আদর্শে মরণপণ মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রাম সফল করতে ভারতের মহীয়সী প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বিপুল সহায়ক শক্তি হিসাবে অবদান রাখেন।
৩. হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানাধীন তেলিয়াপাড়া চা বাগান আমার বাড়ি রতনপুর থেকে তিন মাইল দূরে। ৪ এপ্রিল ম্যানেজারের ডাকবাংলোতে একটি অতিশয় তাৎপর্যপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়- রাজনৈতিক নেতৃত্বের তত্ত্বাবধানে স্বাধীনতা অর্জনের জনযুদ্ধে সামরিক কৌশল নির্ধারণের জন্য। সভাপতিত্ব করেন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এমএজি ওসমানী এমপি। অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল আব্দুর রব এমপি, মেজর কেএম সফিউল্লাহ, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত, মেজর নূরুল ইসলাম, মেজর শাফায়াত জামিল, মেজর মইনুল হোসেন চৌধুরী, মেজর কাজী নুরুজ্জামান, লে. কর্নেল এসএম রেজা ও ক্যাপ্টেন আব্দুল মতিন এ সভায় যোগদান করেন। সিএসপি অফিসার ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার এসডিও কাজী রকিবউদ্দিন আহমদও এ সভায় শরিক হন। অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করার কাজে ভারতে অবস্থান করায় ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম সভাটিতে যোগদান করতে পারেননি। বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করে অঞ্চল অনুযায়ী তবে সমন্বিত জনযুদ্ধের মাধ্যমে মাতৃভূমি বাংলাদেশকে স্বাধীন করার প্রত্যয়ে দীপ্ত হয় তেলিয়াপাড়ার এ সভাটি।
৪. তাজউদ্দীন আহমদ এমপি তার সহকর্মীসহ (আমীর উল ইসলাম বার-এট-ল এমপি) ৬ এপ্রিল আগরতলা পৌঁছলে অধিকাংশ নেতা তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এবং দিল্লি মিশনের সাফল্যে সাধুবাদ দেন। তবে খন্দকার মোশতাক আহমেদ এমপির নেতৃত্বে একটি অংশ তাজউদ্দীন সাহেবের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জ করেন। সৈয়দ নজরুল ইসলাম এমপি এবং এএইচ কামরুজ্জামান এমপির দৃঢ় সমর্থনে বাংলাদেশের ঘোষিত প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বে টিকে যান। অতঃপর ১০ এপ্রিল কলকাতার ৮নং থিয়েটার রোডে অফিস স্থাপন করে মন্ত্রিসভা গঠন করেন তাজউদ্দীন আহমদ।
৫. এরই মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর বেলুচিস্তানের কসাই নামে কুখ্যাত মেজর জেনারেল টিক্কা খানের সঙ্গে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে অখণ্ড পাকিস্তানের সংহতি ও তরক্কীর জন্য সর্বাত্মক সহায়তার ঘোষণা দেয়। পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) থেকে আওয়ামী লীগের ১৬৭ জনের বাইরে যে দুজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তাদের একজন নূরুল আমিনের (১৯৫২ সালে মুখ্যমন্ত্রী, যার আমলে ভাষা আন্দোলনের সময় গুলি করে সালাম-বরকত-রফিক-জব্বারকে হত্যা করা হয়) নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে গোলাম আযম, খাজা খায়েরউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তাদেরই উদ্যোগে ১৪ এপ্রিল ঢাকায় ‘শান্তি কমিটি’ পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতীয় ‘হস্তক্ষেপের’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলের পুরোভাগে খান এ সবুর, খাজা খায়ের উদ্দিন, মাহমুদ আলী (এককালের প্রগতিশীল নেতা), গোলাম আযম, শফিকুল ইসলাম, এ টি সাদি, আবুল কাসেম, আব্দুল জব্বার খদ্দর, সৈয়দ আজিজুল হক নান্না মিয়া, এএসএম সোলায়মান, মেজর (অব.) আকসার উদ্দিন আহমদ, জুলমত আলী খান, বেনজির আহমদ, পীর মোহসেন উদ্দিন প্রমুখকে দেখা যায়। এদের অনেকেই বিজয় দিবসের পরপরই এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশকে ভারতের ‘করদ রাজ্য’ বলে মধ্যপ্রাচ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে থাকেন, ‘শেখ মুজিব ইসলামী জমহুরি পাকিস্তানকে ভেঙে হিন্দুঘেঁষা বাংলাদেশ বানিয়েছেন।’
৬. ২৫ মার্চের ভয়াল নির্মমতা চালানো দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিবেক জাগ্রতকারী মিডিয়ায় আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে জোরালো ভূমিকা এপ্রিলে আরও তীব্র হয়। ৫ এপ্রিল দ্য নিউজউইক বলে, ‘উর্দু, বাংলা ও ইংরেজি পাকিস্তানের তিনটি ভাষায় মুখর শেখ মুজিব নিজেকে মৌলিক চিন্তাবিদ হিসাবে ভান করতেন না। তিনি প্রকৌশলী নন, রাজনীতির কবি। তবে প্রযুক্তির চেয়ে শিল্পকলার প্রতি ঝোঁক বেশি, আর তাই তার শৈলীই যথার্থ ছিল সেই অঞ্চলের সব শ্রেণি ও মতাদর্শকে একতাবদ্ধ করার প্রয়োজনে।’ দ্য টাইমে হেজেলহার্স্ট জানালেন, ‘পশ্চিম বাংলার নকশালপন্থিরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে প্রকাশ্যে শেখ মুজিবকে আমেরিকার দালাল ও সোভিয়েত সংস্কারবাদীদের ক্রীড়নক বলে মত প্রকাশ করছে।’ দ্য বাল্টিমোর সানে জন ই. উডরাফ লিখলেন, ‘পাকিস্তান বাহিনী বাঙালিদের নিশ্চিহ্ন করছে।’
৭. পূর্বাঞ্চলে (বাংলাদেশ) অস্ত্র বিরতির জন্য পাকিস্তান সরকারকে চাপ দিতে ৬ এপ্রিল যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের হাউজ অব কমন্সে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। প্রস্তাবে দেশটির ১৮০ জন পার্লামেন্ট সদস্য দস্তখত করেন। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব (মন্ত্রী) স্যার অ্যালেক ডগলাস হোম বলেন, ব্রিটিশ সরকার পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না। কিন্তু তারা উদ্বিগ্ন যে আর কালক্ষেপণ না করে সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে পাকিস্তান সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা উচিত।
৮. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরীয় মুখপাত্র ৬ এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলাদেশ) পরিস্থিতি নিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘পাকিস্তানকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র এ ধরনের পরিস্থিতিতে ব্যবহৃত হলে স্বভাবতই তারা (আমেরিকানরা) উদ্বিগ্ন হবেন।’
৯. বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ২১ এপ্রিল জাতিসংঘে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে বিশেষ প্রতিনিধি নিযুক্ত হন। ২৫ এপ্রিল মুজিবনগর থেকে স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু হয়।
১০. ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের তোড়জোড় শুরু হয়। মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথ তলার আম্রকাননে অনাড়ম্বরভাবে এ শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান দেশ-বিদেশের মিডিয়ার উপস্থিতিতে সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়। ইতোমধ্যে সরকারের প্রশাসন ব্যবস্থাপনা কাঠামো নির্ধারিত হতে থাকে। ধীরলয়ে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিশিষ্টজন ও জনসাধারণ মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করতে থাকেন। বন্ধুদেশ ভারতের কয়েকটি প্রশিক্ষণ শিবিরে গেরিলাযুদ্ধের ট্রেনিং গ্রহণ করতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধারা। সেক্টর ও সাব-সেক্টরগুলো আঞ্চলিক রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কাজ করতে থাকে। প্রশাসনিক কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অধিকর্তা, শিল্পী, সাহিত্যিক, গায়ক, বিচারক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পরিকল্পনা প্রণয়নকারী, উকিল, মোক্তার, ব্যবসায়ী ৮, থিয়েটার রোডে যোগ দিতে থাকেন। ১৭ এপ্রিলে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিসভা নিম্নরূপে গঠিত হয় :
রাষ্ট্রপতি : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
উপ-রাষ্ট্রপতি ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি : সৈয়দ নজরুল ইসলাম
প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা, বেতার, শিক্ষা : তাজউদ্দীন আহমদ
পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদমন্ত্রী : খন্দকার মোশতাক আহমেদ
অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী : ক্যাপ্টেন মনসুর আলী
স্বরাষ্ট্র, কৃষি, ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী : এএইচএম কামরুজ্জামান
প্রধান সেনাপতি : জেনারেল আতাউল গণি ওসমানী
স্বাধীনতার ঘোষণা ও আইনের ধারাবাহিকতার ঘোষণা পাঠ করেন সোহরাব হোসেন। মন্ত্রিপরিষদের শপথবাক্য পাঠ করান অধ্যাপক ইউসুফ আলী। একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হয়, যেখানে আওয়ামী লীগ ছাড়াও ন্যাপের অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ ও কমিউনিস্ট পার্টির শ্রী মনি সিংহ অন্তর্ভুক্ত হন। আব্দুস সামাদ আজাদ, আব্দুল মালেক উকিল, আব্দুল মান্নান, ফনিভূষণ মজুমদার, এম আর সিদ্দিকী, জহুর আহমেদ চৌধুরী, আমীর-উল-ইসলাম বার এট ল’ প্রমুখকে বিভিন্ন কমিটিতে উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়। তাছাড়া কূটনীতি ক্ষেত্রে ড. এআর মল্লিক, একে খান, খান সরওয়ার মুর্শিদ, ড. এ করিম ও মাহবুব আলম চাষীকে বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হয়।
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে দশজন কূটনৈতিক সার্ভিসের কর্মকর্তা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট পাকিস্তানি মিশন/দূতাবাস থেকে পদত্যাগ করেন। তাদের মধ্যে বন্ধুবর ও ব্যাচমেট কে এম শেহাবউদ্দিন ৬ এপ্রিল দিল্লিতে এবং আবুল হাসান মাহমুদ আলী ২৬ এপ্রিল নিউইয়র্কে বিশ্ব মিডিয়া তরঙ্গের শিরোনাম হয়ে স্বাধীন দেশের শক্তি সঞ্চয়ে বিরাট অবদান রাখেন। পাকিস্তানি দখলদারদের তখ্ত তাউসে ভূকম্পন লাগে।
বঙ্গবন্ধুর মনে সন্দেহের কোনো অবকাশ ছিল না যে, পরাধীনতার জিঞ্জির ছিন্ন করে সাড়ে সাত কোটি মানুষ একদিন স্বাধীনতার স্বাদ পাবেই। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে লক্ষ করা যায়, পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের জন্ম হয় ১৯৪৮ সালের ২৩ জুন (সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কারাবন্দি শেখ মুজিবুর রহমান)। এটি হলো সেই দিন, ১৭৫৭ সালের যেদিনে মীরজাফর, জগৎশেঠ, উমিচাঁদ, রায় দুর্লভ, ঘষেটি বেগমদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে ইংরেজ বেনিয়ারা বাংলার স্বাধীনতার সূর্যকে ২১৪ বছরের জন্য অস্তমিত করে দেয় পলাশীর আম্রকাননে। এই সেই আম্রকানন যেখানে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার মাথা উঁচু করে শপথগ্রহণ করে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। নতুন প্রজন্ম কি আগামী এক-দুই দশকে সোনার বাংলায় কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন সফল করবে?
ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন : অর্থনীতিবিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর