ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সততার দৃষ্টান্ত প্রধানমন্ত্রী

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সততা যেমন ব্যক্তি পর্যায়ে কমে যাচ্ছে, তেমনি এর অভাব ঘটছে রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও। বিশ্বব্যাপী ক্ষমতা ও দুর্নীতি শব্দ দুটি ক্রমেই একাকার হয়ে যাচ্ছে।

অনেক সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানের নামেই উঠছে দুর্নীতির অভিযোগ। নিজ দেশ থেকে অর্থ পাচার করা কিংবা কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত অফশোর ব্যাংক বা কম্পানিতে টাকা জমা করার অভিযোগ উঠছে। কিছুদিন আগে প্রকাশিত পানামা পেপারস এবং সম্প্রতি প্রকাশিত প্যারাডাইস পেপারসে বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, রাজনীতিকদের পাশাপাশি ক্ষমতার শীর্ষে থাকা ব্যক্তিদের নামও উঠে এসেছে। কোনো কোনো দেশের সরকারপ্রধানকে তার মাসুলও দিতে হয়েছে। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মতো অনেককে ক্ষমতা থেকে বিদায়ও নিতে হয়েছে। এই সময়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্থাপিত দৃষ্টান্ত আমাদের গর্বিত করে।

পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, পিপলস অ্যান্ড পলিটিকস নামের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন ১৭৩টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে সৎ নেতৃত্বের একটি তালিকা তৈরি করেছে। তাতে ৩ নম্বরে আছেন শেখ হাসিনা। ১০০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৮৭।

প্রথম স্থানে আছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, পেয়েছেন ৯০ এবং ৮৮ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হসিয়েন লুং। এতে চতুর্থ স্থানে আছেন নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইরনা সোলবার্গ (৮৫ নম্বর) এবং পঞ্চম স্থানে আছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি (৮১ নম্বর)। যদিও শেখ হাসিনার সরকার কিংবা ক্ষমতাসীন দলে থাকা কারো কারো সম্পর্কে নানা রকম কথাবার্তা প্রচলিত রয়েছে, তবু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ব্যক্তিগত অর্জন তুলনাহীন। তাঁর এই অর্জনে জাতি হিসেবে আমরাও গর্ব বোধ করছি।

কোনো একটি দেশের এগিয়ে চলা অনেকাংশেই নির্ভর করে সৎ, দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন নেতৃত্বের ওপর। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এ দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হলেও তেমন নেতৃত্বের অভাবে দেশ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারেনি। দীর্ঘ সামরিক শাসনের সময় কোনো ধরনের জবাবদিহি না থাকায় দেশে দুর্নীতির শিকড় বহুদূর বিস্তৃত হয়ে পড়ে। ক্ষমতার সঙ্গেও দুর্নীতির গাঁটছড়া প্রবলতর হয়। তার প্রমাণ ক্ষমতাসীন অনেক পরিবারের অবৈধ সম্পদ বিদেশের আদালতে প্রমাণিত হওয়া। সেই দুর্নীতি শিগগিরই নির্মূল হবে বলে মনে হয় না। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই অর্জন আমাদের আশান্বিত করে। গত বুধবার সংসদে জাতীয় পার্টির এক এমপি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাথা যখন ঠিক আছে তখন শরীরের অন্যান্য জায়গায় যেটুকু ঘা আছে, তা অচিরেই ঠিক করা যাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, স্বচ্ছতার ঘাটতি আছে এমন কেউ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন না।

প্রধানমন্ত্রীর কথায় আমরা আস্থা রাখতে চাই। সরকার, প্রশাসন ও দল থেকে দুর্নীতি দূর করা গেলে তার প্রভাব অবশ্যই অন্যান্য ক্ষেত্রেও পড়বে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সততা তখন আরো বেশি সার্থকতা খুঁজে পাবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

সততার দৃষ্টান্ত প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০৯:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সততা যেমন ব্যক্তি পর্যায়ে কমে যাচ্ছে, তেমনি এর অভাব ঘটছে রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও। বিশ্বব্যাপী ক্ষমতা ও দুর্নীতি শব্দ দুটি ক্রমেই একাকার হয়ে যাচ্ছে।

অনেক সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানের নামেই উঠছে দুর্নীতির অভিযোগ। নিজ দেশ থেকে অর্থ পাচার করা কিংবা কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত অফশোর ব্যাংক বা কম্পানিতে টাকা জমা করার অভিযোগ উঠছে। কিছুদিন আগে প্রকাশিত পানামা পেপারস এবং সম্প্রতি প্রকাশিত প্যারাডাইস পেপারসে বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, রাজনীতিকদের পাশাপাশি ক্ষমতার শীর্ষে থাকা ব্যক্তিদের নামও উঠে এসেছে। কোনো কোনো দেশের সরকারপ্রধানকে তার মাসুলও দিতে হয়েছে। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মতো অনেককে ক্ষমতা থেকে বিদায়ও নিতে হয়েছে। এই সময়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্থাপিত দৃষ্টান্ত আমাদের গর্বিত করে।

পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, পিপলস অ্যান্ড পলিটিকস নামের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন ১৭৩টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে সৎ নেতৃত্বের একটি তালিকা তৈরি করেছে। তাতে ৩ নম্বরে আছেন শেখ হাসিনা। ১০০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৮৭।

প্রথম স্থানে আছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, পেয়েছেন ৯০ এবং ৮৮ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হসিয়েন লুং। এতে চতুর্থ স্থানে আছেন নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইরনা সোলবার্গ (৮৫ নম্বর) এবং পঞ্চম স্থানে আছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি (৮১ নম্বর)। যদিও শেখ হাসিনার সরকার কিংবা ক্ষমতাসীন দলে থাকা কারো কারো সম্পর্কে নানা রকম কথাবার্তা প্রচলিত রয়েছে, তবু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ব্যক্তিগত অর্জন তুলনাহীন। তাঁর এই অর্জনে জাতি হিসেবে আমরাও গর্ব বোধ করছি।

কোনো একটি দেশের এগিয়ে চলা অনেকাংশেই নির্ভর করে সৎ, দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন নেতৃত্বের ওপর। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এ দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হলেও তেমন নেতৃত্বের অভাবে দেশ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারেনি। দীর্ঘ সামরিক শাসনের সময় কোনো ধরনের জবাবদিহি না থাকায় দেশে দুর্নীতির শিকড় বহুদূর বিস্তৃত হয়ে পড়ে। ক্ষমতার সঙ্গেও দুর্নীতির গাঁটছড়া প্রবলতর হয়। তার প্রমাণ ক্ষমতাসীন অনেক পরিবারের অবৈধ সম্পদ বিদেশের আদালতে প্রমাণিত হওয়া। সেই দুর্নীতি শিগগিরই নির্মূল হবে বলে মনে হয় না। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই অর্জন আমাদের আশান্বিত করে। গত বুধবার সংসদে জাতীয় পার্টির এক এমপি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাথা যখন ঠিক আছে তখন শরীরের অন্যান্য জায়গায় যেটুকু ঘা আছে, তা অচিরেই ঠিক করা যাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, স্বচ্ছতার ঘাটতি আছে এমন কেউ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন না।

প্রধানমন্ত্রীর কথায় আমরা আস্থা রাখতে চাই। সরকার, প্রশাসন ও দল থেকে দুর্নীতি দূর করা গেলে তার প্রভাব অবশ্যই অন্যান্য ক্ষেত্রেও পড়বে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সততা তখন আরো বেশি সার্থকতা খুঁজে পাবে।