ঢাকা , শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্থনীতির পাঁচ চ্যালেঞ্জ: মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি দরকার

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ আমাদের অর্থনীতির আকার বড় হচ্ছে, বাড়ছে প্রবৃদ্ধি। গত দশ বছরে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি জোরালো হওয়াসহ বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ ভালো করেছে।

তারপরও অর্থনীতিতে পাঁচটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলে ব্যবসা সহজীকরণ সূচক নিয়ে আয়োজন করা সেমিনারে মন্তব্য করা হয়।

এ পাঁচটি চ্যালেঞ্জ হল- কর্মসংস্থানের অভাব, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের দক্ষতার ঘাটতি, আয়বৈষম্য, প্রবৃদ্ধির শ্রেণি ও অঞ্চলভিত্তিক সুষম বণ্টনের অভাব এবং শিল্পের অবকাঠামোগত স্বল্পতার সমস্যা।

এ পাঁচটি চ্যালেঞ্জ যে আমাদের অর্থনীতির গতিপথকে আরও মসৃণ ও দৃঢ় পথে চলার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করছে, তা খোলা চোখেই দেখা যায়।

প্রতি বছর চাকরির বাজারে ২২ লাখ মানুষ প্রবেশ করছে এবং এটি প্রতি বছর ৩ দশমিক ১ শতাংশ হারে বাড়ছে। যে হারে মানুষ চাকরির বাজারে প্রবেশ করছে, সে হারে চাকরি বাড়ছে না, ফলে বেকার থাকতে হচ্ছে অনেককে।

বেকারত্ব দূরীকরণ, কর্মক্ষম জনসংখ্যার দক্ষতা বৃদ্ধি, আয়বৈষম্য কমানো, সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা ও অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারকেই সুষ্ঠু নীতিমালা ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

এর বাইরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঢাকা ও চট্টগ্রামকেন্দ্রিক হয়ে পড়া, কর্মসংস্থান ও প্রয়োজনীয় দফতরগুলোকে ছড়িয়ে না দিয়ে এককেন্দ্রিক করে রাখা যে কোনো অর্থনীতির জন্যই নেতিবাচক। আমাদের মতো উন্নয়নশীল অর্থনীতির পথে পা দেয়া দেশের জন্য সেটি আরও খারাপ।

পর্যায়ক্রমে উন্নত দেশের কাতারে যাওয়ার স্বপ্ন দেখা একটি অর্থনীতির জন্য মানসম্মত ও পর্যাপ্ত শিল্প অবকাঠামো নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই।

আশার কথা, সরকার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে। তবে সরকারের উচিত ব্যবসায়ীরা যেসব সমস্যার কথা তুলে ধরেন সেগুলো ধরে ধরে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা।

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত সেমিনারে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, ব্যবসায়ীদের তুলে ধরা সমস্যা কেবল সেমিনারেই আলোচিত হয়, সমাধান হয় না।

এজন্য তিনি বিডা, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি সম্মেলন আয়োজনের কথা বলেছেন। আমরা মনে করি, এ ধরনের সম্মেলন সমন্বয় করে কাজ করা পারস্পরিক যোগাযোগ ও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে পারে।

সিদ্ধান্ত দিতে দেরি ও দ্রুত সেবা না পাওয়ার কারণে শিল্পোদ্যোক্তাদের যে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়, তা কারও অজানা নয়। অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সমন্বিত উদ্যোগ ও সুপরিকল্পিত পদক্ষেপের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

অর্থনীতির পাঁচ চ্যালেঞ্জ: মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি দরকার

আপডেট টাইম : ০২:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ আমাদের অর্থনীতির আকার বড় হচ্ছে, বাড়ছে প্রবৃদ্ধি। গত দশ বছরে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি জোরালো হওয়াসহ বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ ভালো করেছে।

তারপরও অর্থনীতিতে পাঁচটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলে ব্যবসা সহজীকরণ সূচক নিয়ে আয়োজন করা সেমিনারে মন্তব্য করা হয়।

এ পাঁচটি চ্যালেঞ্জ হল- কর্মসংস্থানের অভাব, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের দক্ষতার ঘাটতি, আয়বৈষম্য, প্রবৃদ্ধির শ্রেণি ও অঞ্চলভিত্তিক সুষম বণ্টনের অভাব এবং শিল্পের অবকাঠামোগত স্বল্পতার সমস্যা।

এ পাঁচটি চ্যালেঞ্জ যে আমাদের অর্থনীতির গতিপথকে আরও মসৃণ ও দৃঢ় পথে চলার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করছে, তা খোলা চোখেই দেখা যায়।

প্রতি বছর চাকরির বাজারে ২২ লাখ মানুষ প্রবেশ করছে এবং এটি প্রতি বছর ৩ দশমিক ১ শতাংশ হারে বাড়ছে। যে হারে মানুষ চাকরির বাজারে প্রবেশ করছে, সে হারে চাকরি বাড়ছে না, ফলে বেকার থাকতে হচ্ছে অনেককে।

বেকারত্ব দূরীকরণ, কর্মক্ষম জনসংখ্যার দক্ষতা বৃদ্ধি, আয়বৈষম্য কমানো, সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা ও অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারকেই সুষ্ঠু নীতিমালা ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

এর বাইরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঢাকা ও চট্টগ্রামকেন্দ্রিক হয়ে পড়া, কর্মসংস্থান ও প্রয়োজনীয় দফতরগুলোকে ছড়িয়ে না দিয়ে এককেন্দ্রিক করে রাখা যে কোনো অর্থনীতির জন্যই নেতিবাচক। আমাদের মতো উন্নয়নশীল অর্থনীতির পথে পা দেয়া দেশের জন্য সেটি আরও খারাপ।

পর্যায়ক্রমে উন্নত দেশের কাতারে যাওয়ার স্বপ্ন দেখা একটি অর্থনীতির জন্য মানসম্মত ও পর্যাপ্ত শিল্প অবকাঠামো নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই।

আশার কথা, সরকার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে। তবে সরকারের উচিত ব্যবসায়ীরা যেসব সমস্যার কথা তুলে ধরেন সেগুলো ধরে ধরে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা।

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত সেমিনারে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, ব্যবসায়ীদের তুলে ধরা সমস্যা কেবল সেমিনারেই আলোচিত হয়, সমাধান হয় না।

এজন্য তিনি বিডা, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি সম্মেলন আয়োজনের কথা বলেছেন। আমরা মনে করি, এ ধরনের সম্মেলন সমন্বয় করে কাজ করা পারস্পরিক যোগাযোগ ও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে পারে।

সিদ্ধান্ত দিতে দেরি ও দ্রুত সেবা না পাওয়ার কারণে শিল্পোদ্যোক্তাদের যে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়, তা কারও অজানা নয়। অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সমন্বিত উদ্যোগ ও সুপরিকল্পিত পদক্ষেপের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।