ঢাকা , শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢামেক হাসপাতালে নৈরাজ্য, দালালমুক্ত করা জরুরি

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ মা নুষের মৌলিক মানবাধিকারগুলোর অন্যতম হল চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার। এটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রের এ দায়িত্ব কেবল ব্যক্তিকে সুস্থ রাখার স্বার্থে নয়; দেশ, সমাজ ও জাতিকে সুস্থ রাখার অনিবার্য প্রয়োজনেও।

দেশে স্বাস্থ্যসেবার সেই দায়িত্বের জায়গাটিতে অত্যন্ত নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। এক্ষেত্রে দেশের সবচেয়ে বড় চিকিৎসাকেন্দ্র ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যে অবস্থা বিরাজ করছে, তাকে এক কথায় ভয়াবহ বললে কম

বলা হয়। আর সেই ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে।

বিনামূল্যের সেবা পেতে সেখানে টাকা গুনতে হচ্ছে প্রতিটি পদক্ষেপে। প্রকাশ্য দিবালোকে সেখানে চিকিৎসা প্রত্যাশী হাজার হাজার মানুষ একশ্রেণির বহিরাগত দালালদের হাতে নিগৃহীত হচ্ছেন, লাঞ্ছিত হচ্ছেন।

যুগান্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢামেক হাসপাতাল ঘিরে সক্রিয় রয়েছে ১২টি সিন্ডিকেট। এর মধ্যে ট্রলি, অ্যাম্বুলেন্স, রোগী ভাগানো, টেস্ট ভাগানো, রক্ত বাণিজ্য, আইসিইউ, মোবাইল চোর, জাল মেডিকেল সার্টিফিকেট ও মাদক সিন্ডিকেট উল্লেখযোগ্য। তারা হাসপাতালের কর্মচারী নেতা, ক্ষমতাসীন দল ও এর অঙ্গসংগঠনের হাসপাতাল ইউনিট নেতাদের ছত্রছায়ায় তৎপরতা চালায়।

চিকিৎসা নিতে হাসপাতাল সীমানায় পা ফেলার পর যে কাউকে কোনো না কোনোভাবে এদের খপ্পরে পড়তে হয়। ফলে জীবন বাঁচাতে চিকিৎসা নিতে এসে সেখানে অসুস্থ মানুষের জীবন হয়ে পড়ছে বিপন্ন। এ পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগের। সরকারের উচিত অবিলম্বে এদিকে দৃষ্টি দেয়া। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দালালসহ সব ধরনের সিন্ডিকেটমুক্ত করতে হবে যে কোনো মূল্যে।

এ চিত্র যে কেবল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের, তা নয়। বলা চলে দেশের সব সরকারি হাসপাতালেরই চিত্র এটি। মূল্য দিয়ে যদি সেবা মিলত তাহলেও বলার কিছু ছিল না; কিন্তু মূল্য দিয়েও সেবার বদলে সর্বত্র মিলছে দুর্ভোগ আর হতে হচ্ছে হেনস্তা।

বস্তুত দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় এক ব্যাপক নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স, সেবাকর্মী, পরিচালক- সবার সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। ধনী-গরিব নির্বিশেষে দেশের মানুষ যাতে সুচিকিৎসা পায়, তা নিশ্চিত করা এখনই জরুরি হয়ে পড়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢামেক হাসপাতালে নৈরাজ্য, দালালমুক্ত করা জরুরি

আপডেট টাইম : ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ মা নুষের মৌলিক মানবাধিকারগুলোর অন্যতম হল চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার। এটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রের এ দায়িত্ব কেবল ব্যক্তিকে সুস্থ রাখার স্বার্থে নয়; দেশ, সমাজ ও জাতিকে সুস্থ রাখার অনিবার্য প্রয়োজনেও।

দেশে স্বাস্থ্যসেবার সেই দায়িত্বের জায়গাটিতে অত্যন্ত নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। এক্ষেত্রে দেশের সবচেয়ে বড় চিকিৎসাকেন্দ্র ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যে অবস্থা বিরাজ করছে, তাকে এক কথায় ভয়াবহ বললে কম

বলা হয়। আর সেই ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে।

বিনামূল্যের সেবা পেতে সেখানে টাকা গুনতে হচ্ছে প্রতিটি পদক্ষেপে। প্রকাশ্য দিবালোকে সেখানে চিকিৎসা প্রত্যাশী হাজার হাজার মানুষ একশ্রেণির বহিরাগত দালালদের হাতে নিগৃহীত হচ্ছেন, লাঞ্ছিত হচ্ছেন।

যুগান্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢামেক হাসপাতাল ঘিরে সক্রিয় রয়েছে ১২টি সিন্ডিকেট। এর মধ্যে ট্রলি, অ্যাম্বুলেন্স, রোগী ভাগানো, টেস্ট ভাগানো, রক্ত বাণিজ্য, আইসিইউ, মোবাইল চোর, জাল মেডিকেল সার্টিফিকেট ও মাদক সিন্ডিকেট উল্লেখযোগ্য। তারা হাসপাতালের কর্মচারী নেতা, ক্ষমতাসীন দল ও এর অঙ্গসংগঠনের হাসপাতাল ইউনিট নেতাদের ছত্রছায়ায় তৎপরতা চালায়।

চিকিৎসা নিতে হাসপাতাল সীমানায় পা ফেলার পর যে কাউকে কোনো না কোনোভাবে এদের খপ্পরে পড়তে হয়। ফলে জীবন বাঁচাতে চিকিৎসা নিতে এসে সেখানে অসুস্থ মানুষের জীবন হয়ে পড়ছে বিপন্ন। এ পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগের। সরকারের উচিত অবিলম্বে এদিকে দৃষ্টি দেয়া। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দালালসহ সব ধরনের সিন্ডিকেটমুক্ত করতে হবে যে কোনো মূল্যে।

এ চিত্র যে কেবল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের, তা নয়। বলা চলে দেশের সব সরকারি হাসপাতালেরই চিত্র এটি। মূল্য দিয়ে যদি সেবা মিলত তাহলেও বলার কিছু ছিল না; কিন্তু মূল্য দিয়েও সেবার বদলে সর্বত্র মিলছে দুর্ভোগ আর হতে হচ্ছে হেনস্তা।

বস্তুত দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় এক ব্যাপক নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স, সেবাকর্মী, পরিচালক- সবার সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। ধনী-গরিব নির্বিশেষে দেশের মানুষ যাতে সুচিকিৎসা পায়, তা নিশ্চিত করা এখনই জরুরি হয়ে পড়েছে।