ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সহিংসতামুক্ত সুষ্ঠু ভোট চাই

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রাথমিক আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার রিটার্নিং অফিসারের কাছে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দুই সিটিতে মোট নয়টি দলের ১৪ জন হয়েছেন মেয়রপ্রার্থী। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, সিপিবি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ছাড়াও এনপিপি, পিডিপি, গণফ্রন্ট ও বাংলাদেশ কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে এবার। মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে সব মিলিয়ে এক হাজার ৩০টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।

জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকার, সব নির্বাচনের আগে অনেক প্রার্থীর কাছ থেকে নানা অভিযোগ পাওয়া যায়। বিশেষ করে বিরোধী রাজনীতির অনুসারী প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে থাকেন। তাদের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের বেশি সুযোগ-সুবিধা দেয়, পক্ষান্তরে বিরোধীপক্ষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়। এ পর্যন্ত দেশে এমন কোনো নির্বাচন হয়নি, যে নির্বাচনে সরকারপক্ষ ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি। তবে এবার প্রার্থীরা একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। ঢাকার দুই সিটি এলাকায় পুরো মাসই নির্বাচনী আবহে উৎসবমুখর পরিবেশ থাকবে, এমন আশা করা হচ্ছে।

নির্বাচনে জনগণ যাকে চাইবে তিনিই বিজয়ী হবেন, গণতন্ত্রে এটাই রীতি। তাই প্রত্যেক প্রার্থীরই জনগণের ওপর আস্থা থাকাটা জরুরি। তারা তাদের কর্ম বা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণের মন জয়ের চেষ্টা করবেন। জোরজবরদস্তি বা অগণতান্ত্রিক কোনো পন্থা অবলম্বন করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার যে কোনো অপচেষ্টা মানুষ অপছন্দ করে। নির্বাচনের পরিবেশও তাতে ব্যাহত হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে তেমন অপচেষ্টা মোকাবেলা করতে হয়। পাশাপাশি জনগণকেও সজাগ থাকতে হয়। জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতেই নির্ধারিত হয় জয়-পরাজয়। কাজেই জয়ের জন্য নির্বাচনের মাঠে অবতীর্ণ হলেও পরাজয় মেনে নেয়ার মানসিকতা অবশ্যই সব দলের মধ্যে থাকতে হবে।

নির্বাচনে ভোটাররা যেন অবাধে ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে পারেন, সে নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের সামাজিক বাস্তবতা অনেক। এটি সমাজ নির্মাণের একটি শক্তিশালী ভিত্তি। আমি মনে করি, নির্বাচন সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তির রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় পরিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণের স্বাধীনতা থাকা উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মী ও সমর্থকদের অবশ্যই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকা, প্রচারণা চালানো, ভয়ভীতি, প্রতিশোধ বা জবরদস্তিমূলক বিধিনিষেধ ছাড়াই সমাবেশ করার স্বাধীনতা থাকতে হবে। নির্বাচনের আগে, নির্বাচন চলাকালে এবং নির্বাচনের পরে শান্তি বজায় রাখতে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে। মনে রাখতে হবে, সহিংসতায় কেবল তারাই লাভবান হয়, যারা বাংলাদেশের ভালো চায় না।

পরিশেষে বলতে চাই, সবার অংশগ্রহণে একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক। যারাই নির্বাচিত হোন না কেন, জনগণ তাদের নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা পাবে, এটাই কাম্য।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

সহিংসতামুক্ত সুষ্ঠু ভোট চাই

আপডেট টাইম : ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রাথমিক আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার রিটার্নিং অফিসারের কাছে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দুই সিটিতে মোট নয়টি দলের ১৪ জন হয়েছেন মেয়রপ্রার্থী। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, সিপিবি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ছাড়াও এনপিপি, পিডিপি, গণফ্রন্ট ও বাংলাদেশ কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে এবার। মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে সব মিলিয়ে এক হাজার ৩০টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।

জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকার, সব নির্বাচনের আগে অনেক প্রার্থীর কাছ থেকে নানা অভিযোগ পাওয়া যায়। বিশেষ করে বিরোধী রাজনীতির অনুসারী প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে থাকেন। তাদের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের বেশি সুযোগ-সুবিধা দেয়, পক্ষান্তরে বিরোধীপক্ষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়। এ পর্যন্ত দেশে এমন কোনো নির্বাচন হয়নি, যে নির্বাচনে সরকারপক্ষ ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি। তবে এবার প্রার্থীরা একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। ঢাকার দুই সিটি এলাকায় পুরো মাসই নির্বাচনী আবহে উৎসবমুখর পরিবেশ থাকবে, এমন আশা করা হচ্ছে।

নির্বাচনে জনগণ যাকে চাইবে তিনিই বিজয়ী হবেন, গণতন্ত্রে এটাই রীতি। তাই প্রত্যেক প্রার্থীরই জনগণের ওপর আস্থা থাকাটা জরুরি। তারা তাদের কর্ম বা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণের মন জয়ের চেষ্টা করবেন। জোরজবরদস্তি বা অগণতান্ত্রিক কোনো পন্থা অবলম্বন করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার যে কোনো অপচেষ্টা মানুষ অপছন্দ করে। নির্বাচনের পরিবেশও তাতে ব্যাহত হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে তেমন অপচেষ্টা মোকাবেলা করতে হয়। পাশাপাশি জনগণকেও সজাগ থাকতে হয়। জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতেই নির্ধারিত হয় জয়-পরাজয়। কাজেই জয়ের জন্য নির্বাচনের মাঠে অবতীর্ণ হলেও পরাজয় মেনে নেয়ার মানসিকতা অবশ্যই সব দলের মধ্যে থাকতে হবে।

নির্বাচনে ভোটাররা যেন অবাধে ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে পারেন, সে নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের সামাজিক বাস্তবতা অনেক। এটি সমাজ নির্মাণের একটি শক্তিশালী ভিত্তি। আমি মনে করি, নির্বাচন সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তির রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় পরিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণের স্বাধীনতা থাকা উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মী ও সমর্থকদের অবশ্যই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকা, প্রচারণা চালানো, ভয়ভীতি, প্রতিশোধ বা জবরদস্তিমূলক বিধিনিষেধ ছাড়াই সমাবেশ করার স্বাধীনতা থাকতে হবে। নির্বাচনের আগে, নির্বাচন চলাকালে এবং নির্বাচনের পরে শান্তি বজায় রাখতে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে। মনে রাখতে হবে, সহিংসতায় কেবল তারাই লাভবান হয়, যারা বাংলাদেশের ভালো চায় না।

পরিশেষে বলতে চাই, সবার অংশগ্রহণে একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক। যারাই নির্বাচিত হোন না কেন, জনগণ তাদের নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা পাবে, এটাই কাম্য।