ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবৈধ বালু উত্তোলন: সম্পদ ও পরিবেশের ক্ষতি রোধ করতে হবে

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ আধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণে বালু একটি অপরিহার্য সামগ্রী। দেশে যেহেতু শিল্প-কারখানাসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও ভবনের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেহেতু আগামীতেও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর পাশাপাশি বালুর ব্যবহার আরও বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক।

দারিদ্র্য বিমোচনেও এ নির্মাণ সামগ্রীর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তবে পরিকল্পনাহীন বালু উত্তোলনের রয়েছে নানা ক্ষতিকর প্রভাব। কাজেই পরিবেশের ক্ষতি না করে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি কী করে এর ক্ষতিকর প্রভাব এড়ানো যায়, তা খুঁজে বের করতে হবে। মঙ্গলবার যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বরিশালের সন্ধ্যা নদী থেকে বেপরোয়া বালু উত্তোলনের কারণে ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে জেলার বানারীপাড়া ও উজিরপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় সংসদ সদস্যের চিঠি ও স্থানীয় জনসাধারণের বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সত্ত্বেও সন্ধ্যার কয়েকটি পয়েন্টের বালুমহাল ইজারা দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল বরিশাল জেলা প্রশাসন। এরপর আদালতের রায় অনুযায়ী সন্ধ্যা নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকার কথা থাকলেও নদীটির বিভিন্ন পয়েন্টে অব্যাহত রয়েছে বালু উত্তোলন। প্রতিদিন ড্রেজার দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে একটানা উত্তোলন করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বালু।

জানা গেছে, যখন যেখানে খুশি এ নদীর সেখান থেকেই বালু উঠাচ্ছে ঠিকাদাররা। এর ফলে তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একাধিকবার স্থানান্তর করার পর সেগুলো এখনও হুমকির মুখে রয়েছে। একইভাবে ভাঙনের কারণে কয়েক দফা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন অনেকে। এলাকাবাসী মনে করছেন, অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন বন্ধ হলে হয়তো ভাঙনের তীব্রতা কিছুটা কমবে।

বস্তুত সন্ধ্যা নদীর মতো সারা দেশেই নদীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে চলছে বেপরোয়া বালু উত্তোলন। এর ফলে অনেক বড় বড় স্থাপনা ও সড়ক-মহাসড়ক হুমকির মুখে পড়ছে। অবৈধ বালু উত্তোলনের মাধ্যমে স্থানীয় প্রভাবশালীরা ব্যাপকভাবে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদী ও নদীর তীরবর্তী জনগণ। নদীর ভাঙন রোধে সরকারকে ব্যয় করতে হচ্ছে বিপুল অঙ্কের অর্থ। এ অবস্থায় অপরিকল্পিত ও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে সরকারের কঠোর হওয়ার বিকল্প নেই।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

অবৈধ বালু উত্তোলন: সম্পদ ও পরিবেশের ক্ষতি রোধ করতে হবে

আপডেট টাইম : ০৬:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ আধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণে বালু একটি অপরিহার্য সামগ্রী। দেশে যেহেতু শিল্প-কারখানাসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও ভবনের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেহেতু আগামীতেও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর পাশাপাশি বালুর ব্যবহার আরও বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক।

দারিদ্র্য বিমোচনেও এ নির্মাণ সামগ্রীর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তবে পরিকল্পনাহীন বালু উত্তোলনের রয়েছে নানা ক্ষতিকর প্রভাব। কাজেই পরিবেশের ক্ষতি না করে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি কী করে এর ক্ষতিকর প্রভাব এড়ানো যায়, তা খুঁজে বের করতে হবে। মঙ্গলবার যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বরিশালের সন্ধ্যা নদী থেকে বেপরোয়া বালু উত্তোলনের কারণে ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে জেলার বানারীপাড়া ও উজিরপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় সংসদ সদস্যের চিঠি ও স্থানীয় জনসাধারণের বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সত্ত্বেও সন্ধ্যার কয়েকটি পয়েন্টের বালুমহাল ইজারা দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল বরিশাল জেলা প্রশাসন। এরপর আদালতের রায় অনুযায়ী সন্ধ্যা নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকার কথা থাকলেও নদীটির বিভিন্ন পয়েন্টে অব্যাহত রয়েছে বালু উত্তোলন। প্রতিদিন ড্রেজার দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে একটানা উত্তোলন করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বালু।

জানা গেছে, যখন যেখানে খুশি এ নদীর সেখান থেকেই বালু উঠাচ্ছে ঠিকাদাররা। এর ফলে তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একাধিকবার স্থানান্তর করার পর সেগুলো এখনও হুমকির মুখে রয়েছে। একইভাবে ভাঙনের কারণে কয়েক দফা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন অনেকে। এলাকাবাসী মনে করছেন, অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন বন্ধ হলে হয়তো ভাঙনের তীব্রতা কিছুটা কমবে।

বস্তুত সন্ধ্যা নদীর মতো সারা দেশেই নদীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে চলছে বেপরোয়া বালু উত্তোলন। এর ফলে অনেক বড় বড় স্থাপনা ও সড়ক-মহাসড়ক হুমকির মুখে পড়ছে। অবৈধ বালু উত্তোলনের মাধ্যমে স্থানীয় প্রভাবশালীরা ব্যাপকভাবে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদী ও নদীর তীরবর্তী জনগণ। নদীর ভাঙন রোধে সরকারকে ব্যয় করতে হচ্ছে বিপুল অঙ্কের অর্থ। এ অবস্থায় অপরিকল্পিত ও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে সরকারের কঠোর হওয়ার বিকল্প নেই।