ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গার্মেন্টস খাত এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে হলি আর্টিজান হামলার ক্ষত

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ  গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার এক বছর হয়ে গেল। কিন্তু এখনও এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে রেহাই পাচ্ছে না গার্মেন্টস খাতের শিল্প উদ্যোক্তারা। এখনও অনেক দেশের ক্রেতা তৈরি পোশাকের অর্ডার দিতে বাংলাদেশে আসতে ভয় পাচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে নিটওয়্যার রফতানি কারক ও প্রস্ততকারকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার এক বছর পরও বিদেশি ক্রেতাদের অনেকে বাংলাদেশে আসতে চাইছেন না। এখনও অনেকে ক্রেতা ভয় পাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমার একজন জার্মানির বায়ার (ক্রেতা) এই মাসে আসার কথা ছিল। কিন্তু তিনি এখনও ঢাকায় আসতে সাহস পাচ্ছেন না। তিনি উল্লেখ করেন, হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর খুবই খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। তবে  ঘটনার পর সরকারের যথাযথ উদ্যোগের ফলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে। সরকার ও ব্যবসায়ীদের চেষ্টার ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ক্রেতাদের মধ্যে ভয় কাটেনি।

জানা গেছে, বাংলাদেশে বিদেশি  ক্রেতা ও পর্যটকরা আসা কমিয়ে দেওয়া শুরু করে মূলত ইতালি নাগরিক তাভেল্লা সিজার হত্যার পর থেকেই। এরপর আরও কয়েকজন বিদেশির ওপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে? বিশেষ করে গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা ১৭ বিদেশিকে হত্যার পর থেকে বাংলাদেশে সফরে আসার ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক হয়ে পড়ে বিদেশিরা।

প্রসঙ্গত, গুলশান হামলার পর থেকে অর্ডার আনতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের তৃতীয় কোনও দেশে গিয়ে বৈঠক করতে হয়েছে। বিদেশি পর্যটকরা তাদের সম্ভাব্য বেশ কয়েকটি সফর বাতিল করেছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক মানের বেশ কয়েকটি সম্মেলনও স্থগিত করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘গুলশান হামলা হওয়ার পর থেকেই মানুষের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। এখন দেশের ভেতরে হয়তো সেই ভয়টা নেই। তবে দেশের বাইরে এই ভীতিটা এখনও আছেই। কিন্তু, এই ধরনের ভীতি অর্থনীতির জন্য খুবই ক্ষতিকর।’ তিনি বলেন, ভীতি নিয়ে বিদেশিরা এই দেশে বিনিয়োগ করতে চাইবেন না। নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে কেবল বিদেশিরাই নয়, দেশি উদ্যোক্তারাও বিনিয়োগ করতে চাইবেন না। হয়ত এ কারণেই দেশে বিনিয়োগ বাড়ানো যাচ্ছে না।

গুলশান হামলার ঘটনার পর পরই বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে ঋণমানের ঝুঁকি নির্ধারণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার পূর্বাভাস দিয়েছিল আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান মুড’স।ওই সময় সংস্থাটির বক্তব্য ছিল, ‘গুলশানের ঘটনা বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে সরাসরি প্রভাব ফেলবে। আর সেটি হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তৈরি পোশাক রফতানি খাত। তৈরি পোশাক বাংলাদেশের রফতানি আয়ের প্রধান চালক। বাংলাদেশের জিডিপিতে রফতানি খাতের অবদান ১৬ শতাংশেরও বেশি। এটি ধরে রাখতে হলে বস্ত্র খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ টিকিয়ে রাখতে হবে। কারণ, বাংলাদেশের রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশই বস্ত্র খাতনির্ভর।

এদিকে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে তৈরি পোশাক খাত থেকে দুই হাজার ৪৬৩ কোটি ডলার আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্যের তুলনায় ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ আয় কম হয়েছে ওভেন গার্মেন্টে। আর নিটওয়্যার খাত লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ দূরে রয়েছে। যদিও পোশাক রফতানিতে আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ২১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে রফতানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গুলশান হামলার পর তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসা কমেছে। বিদেশে বাংলাদেশ নিয়ে প্রচুর নেতিবাচক প্রচারণা হয়েছে। তখন বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা, ভয় ও শংকার কারণে ব্যবসা কিছুদিন খারাপও গেছে। অনেক দিন আমাদের বাইরের দেশে গিয়ে তাদের সঙ্গে মিটিংও করতে হয়েছে। তবে সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

হলি আর্টিজান হামলার নেতিবাচক প্রভাব যে কেবল গার্মেন্টস খাতেই পড়েছে তা নয়, পর্যটন খাতেও এর ঘানি টানতে হচ্ছে। পর্যটন খাতের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, গুলশান হামলার পর বিদেশি পর্যটকরা তাদের বেশ কিছু সফর বাতিল করেছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক মানের বেশ কয়েকটি সম্মেলনও স্থগিত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, গেল এক বছরে নিরাপত্তা ইস্যুতে দেশীয় বিভিন্ন ঝাঁকজমকপূর্ণ সেলিব্রেশন অনুষ্ঠানও হয়নি।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সভাপতি তৌফিক উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, গত বছরের ১ জুলাই ঘটনার পর থেকে এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না পর্যটন খাত। তিনি উল্লেখ করেন, সাধারণত সেপ্টেম্বরের পর থেকে পর্যটকদের আগমন বাড়ে। এ সময়কে ঘিরে অনেক দেশ থেকে পর্যটকরা আগাম বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু গুলশান হামলার ঘটনায় পর্যটকরা আগের বুকিংগুলো বাতিল করার ফলে পর্যটন শিল্পকে ঘিরে গড়ে ওঠা হোটেল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মন্দাভাব দেখা দেয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে নিহত হয় তিন বাংলাদেশি নাগরিকসহ ২০ জন। অন্যদের মধ্যে ৯ জন ইতালির, ৭ জন জাপানের এবং একজন ভারতীয়। এছাড়া জঙ্গিদের হামলার শুরুতেই  তাদের আক্রমণে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। রেস্তোরাঁর ভেতরে রাতভর জিম্মি ছিলেন অন্তত ২৪ জন, যাদের প্রায় ১১ ঘণ্টা পর পরদিন সকালে সেনা কমান্ডো পরিচালিত অপারেশন থান্ডারবোল্টের সময় উদ্ধার করা হয়। এছাড়া রাতের বিভিন্ন সময় উদ্ধার করা হয় আরও অন্তত ৭ জনকে। অপারেশন থান্ডারবোল্টের পর রেঁস্তোরা থেকে ৫ জঙ্গিসহ ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া পালাতে গিয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরেক রেস্তোরাঁকর্মী। এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের হওয়া মামলাটি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি) তদন্ত করছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

গার্মেন্টস খাত এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে হলি আর্টিজান হামলার ক্ষত

আপডেট টাইম : ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুলাই ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ  গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার এক বছর হয়ে গেল। কিন্তু এখনও এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে রেহাই পাচ্ছে না গার্মেন্টস খাতের শিল্প উদ্যোক্তারা। এখনও অনেক দেশের ক্রেতা তৈরি পোশাকের অর্ডার দিতে বাংলাদেশে আসতে ভয় পাচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে নিটওয়্যার রফতানি কারক ও প্রস্ততকারকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার এক বছর পরও বিদেশি ক্রেতাদের অনেকে বাংলাদেশে আসতে চাইছেন না। এখনও অনেকে ক্রেতা ভয় পাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমার একজন জার্মানির বায়ার (ক্রেতা) এই মাসে আসার কথা ছিল। কিন্তু তিনি এখনও ঢাকায় আসতে সাহস পাচ্ছেন না। তিনি উল্লেখ করেন, হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর খুবই খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। তবে  ঘটনার পর সরকারের যথাযথ উদ্যোগের ফলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে। সরকার ও ব্যবসায়ীদের চেষ্টার ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ক্রেতাদের মধ্যে ভয় কাটেনি।

জানা গেছে, বাংলাদেশে বিদেশি  ক্রেতা ও পর্যটকরা আসা কমিয়ে দেওয়া শুরু করে মূলত ইতালি নাগরিক তাভেল্লা সিজার হত্যার পর থেকেই। এরপর আরও কয়েকজন বিদেশির ওপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে? বিশেষ করে গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা ১৭ বিদেশিকে হত্যার পর থেকে বাংলাদেশে সফরে আসার ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক হয়ে পড়ে বিদেশিরা।

প্রসঙ্গত, গুলশান হামলার পর থেকে অর্ডার আনতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের তৃতীয় কোনও দেশে গিয়ে বৈঠক করতে হয়েছে। বিদেশি পর্যটকরা তাদের সম্ভাব্য বেশ কয়েকটি সফর বাতিল করেছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক মানের বেশ কয়েকটি সম্মেলনও স্থগিত করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘গুলশান হামলা হওয়ার পর থেকেই মানুষের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। এখন দেশের ভেতরে হয়তো সেই ভয়টা নেই। তবে দেশের বাইরে এই ভীতিটা এখনও আছেই। কিন্তু, এই ধরনের ভীতি অর্থনীতির জন্য খুবই ক্ষতিকর।’ তিনি বলেন, ভীতি নিয়ে বিদেশিরা এই দেশে বিনিয়োগ করতে চাইবেন না। নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে কেবল বিদেশিরাই নয়, দেশি উদ্যোক্তারাও বিনিয়োগ করতে চাইবেন না। হয়ত এ কারণেই দেশে বিনিয়োগ বাড়ানো যাচ্ছে না।

গুলশান হামলার ঘটনার পর পরই বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে ঋণমানের ঝুঁকি নির্ধারণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার পূর্বাভাস দিয়েছিল আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান মুড’স।ওই সময় সংস্থাটির বক্তব্য ছিল, ‘গুলশানের ঘটনা বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে সরাসরি প্রভাব ফেলবে। আর সেটি হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তৈরি পোশাক রফতানি খাত। তৈরি পোশাক বাংলাদেশের রফতানি আয়ের প্রধান চালক। বাংলাদেশের জিডিপিতে রফতানি খাতের অবদান ১৬ শতাংশেরও বেশি। এটি ধরে রাখতে হলে বস্ত্র খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ টিকিয়ে রাখতে হবে। কারণ, বাংলাদেশের রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশই বস্ত্র খাতনির্ভর।

এদিকে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে তৈরি পোশাক খাত থেকে দুই হাজার ৪৬৩ কোটি ডলার আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্যের তুলনায় ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ আয় কম হয়েছে ওভেন গার্মেন্টে। আর নিটওয়্যার খাত লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ দূরে রয়েছে। যদিও পোশাক রফতানিতে আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ২১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে রফতানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গুলশান হামলার পর তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসা কমেছে। বিদেশে বাংলাদেশ নিয়ে প্রচুর নেতিবাচক প্রচারণা হয়েছে। তখন বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা, ভয় ও শংকার কারণে ব্যবসা কিছুদিন খারাপও গেছে। অনেক দিন আমাদের বাইরের দেশে গিয়ে তাদের সঙ্গে মিটিংও করতে হয়েছে। তবে সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

হলি আর্টিজান হামলার নেতিবাচক প্রভাব যে কেবল গার্মেন্টস খাতেই পড়েছে তা নয়, পর্যটন খাতেও এর ঘানি টানতে হচ্ছে। পর্যটন খাতের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, গুলশান হামলার পর বিদেশি পর্যটকরা তাদের বেশ কিছু সফর বাতিল করেছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক মানের বেশ কয়েকটি সম্মেলনও স্থগিত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, গেল এক বছরে নিরাপত্তা ইস্যুতে দেশীয় বিভিন্ন ঝাঁকজমকপূর্ণ সেলিব্রেশন অনুষ্ঠানও হয়নি।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সভাপতি তৌফিক উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, গত বছরের ১ জুলাই ঘটনার পর থেকে এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না পর্যটন খাত। তিনি উল্লেখ করেন, সাধারণত সেপ্টেম্বরের পর থেকে পর্যটকদের আগমন বাড়ে। এ সময়কে ঘিরে অনেক দেশ থেকে পর্যটকরা আগাম বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু গুলশান হামলার ঘটনায় পর্যটকরা আগের বুকিংগুলো বাতিল করার ফলে পর্যটন শিল্পকে ঘিরে গড়ে ওঠা হোটেল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মন্দাভাব দেখা দেয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে নিহত হয় তিন বাংলাদেশি নাগরিকসহ ২০ জন। অন্যদের মধ্যে ৯ জন ইতালির, ৭ জন জাপানের এবং একজন ভারতীয়। এছাড়া জঙ্গিদের হামলার শুরুতেই  তাদের আক্রমণে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। রেস্তোরাঁর ভেতরে রাতভর জিম্মি ছিলেন অন্তত ২৪ জন, যাদের প্রায় ১১ ঘণ্টা পর পরদিন সকালে সেনা কমান্ডো পরিচালিত অপারেশন থান্ডারবোল্টের সময় উদ্ধার করা হয়। এছাড়া রাতের বিভিন্ন সময় উদ্ধার করা হয় আরও অন্তত ৭ জনকে। অপারেশন থান্ডারবোল্টের পর রেঁস্তোরা থেকে ৫ জঙ্গিসহ ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া পালাতে গিয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরেক রেস্তোরাঁকর্মী। এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের হওয়া মামলাটি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি) তদন্ত করছে।