বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ উচ্চ মানের পণ্য প্রস্তুত ও বিক্রির পাশাপাশি দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবাকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে ওয়ালটন। বিক্রয়োত্তর সেবাকে আরো গ্রাহক বান্ধব করতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানটি। এরই ধারাবাহিকতায় বাড়ানো হয়েছে সার্ভিস পয়েন্টের সংখ্যা। পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে রাজধানীসহ কয়েকটি জেলা শহরে চালু হয়েছে অনলাইন ভিত্তিক ব্যতিক্রমী সেবা। প্রত্যন্ত অঞ্চলে অতি অল্প সময়ে সেবা দিতে চালু হয়েছে ‘ট্র্যাভেলিং সার্ভিস পয়েন্ট’ নামে বিশেষ পরিবহন। জোরদার করা হয়েছে হোম সার্ভিস।
গ্রাহকদের দ্রুত ও নিখুঁত সেবা পৌঁছে দিতে গত বছর ওয়ালটনের সার্ভিস সেন্টারের সংখ্যা ছিল ৬৫। চলতি বছর চালু হয়েছে আরো ৫টি নতুন পূর্ণাঙ্গ সার্ভিস সেন্টার। পাইপলাইনে রয়েছে আরো দুটি সার্ভিস পয়েন্ট। যা চলতি বছরের মধ্যেই চালু হচ্ছে। এর পাশাপাশি সারা দেশে বিস্তৃত ৩’শতাধিক ওয়ালটন প্লাজা ও কয়েক সহস্রাধিক পরিবেশক আউটলেট থেকে গ্রাহকদের সেবা দেয়া হচ্ছে।
ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ((WSMS) সূত্রমতে, গ্রাহক সেবায় আধুনিকতা আনতে চালু হয়েছে অনলাইন সেবা। গত এপ্রিলে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এটি চালু হয়েছে। এর ফলে গ্রাহক ঘরে বসেই তার পণ্যের সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারছেন। যা গ্রাহক পর্যায়ে ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে WSMS কল সেন্টারের কর্মকর্তা মো. নাহিদ হোসেন বলেন, অনলাইন সেবার জন্য একটি ওয়েব পেইজ (http://support.waltonbd.com) ডেভেলপ করেছে ওয়ালটন। এর মাধ্যমে ঘরে বসেই সেবা পাওয়ার অনুরোধ করা যাবে। এছাড়াও, ‘লাইভ চ্যাট’ এর মাধ্যমে জানাতে পারবেন বিক্রয়োত্তর সেবার মান উন্নয়ন সম্পর্কে বিভিন্ন পরামর্শ। অনলাইন সেবা চালু হয়েছে রাজধানীর মতিঝিল, পলওয়েল মার্কেট, খিলগাঁও, উত্তরা, কুড়িল, মোহাম্মদপুর ও কেরানীগঞ্জে। ঢাকার বাইরে এই সেবা দেয়া হচ্ছে চুয়াডাঙ্গা ও শরীয়তপুরে। শিগগিরই দেশজুড়ে ওয়ালটনের সকল সার্ভিস পয়েন্টকে এই অনলাইন সেবার আওতায় আনা হবে। গ্রাহকবান্ধব বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করতে গ্রাহকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়ার অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।
WSMS-এর প্রধান মো. নিয়ামুল হক বলেন, দ্রুততার সঙ্গে সর্বোচ্চমানের বিক্রয়োত্তর সেবাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে ওয়ালটন। এ জন্য সার্ভিস প্রোভাইডারের কর্মদক্ষতা উন্নয়ন ও সার্ভিসের মান উন্নয়নে বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে দিনের কাজ দিনেই শেষ করতে। এজন্য তাদের দেয়া হচ্ছে প্রণোদনা ভাতা। যার প্রেক্ষিতে, বর্তমানে ওয়ালটন সার্ভিস সেন্টারে আসা অধিকাংশ গ্রাহককেই দেয়া হচ্ছে তাৎক্ষণিক সেবা।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ফ্রিজ, টিভি, এসি, মোবাইল ফোন সেট, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ইত্যাদি পণ্যের সার্ভিসিং এ বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটন গ্রুপেরই রয়েছে আইএসও সনদ (আইএসও ৯০০১:২০০৮)। বিশ্বমানের মেশিনারিজ ও উচ্চ শিক্ষিত প্রকৌশলী এবং টেকনিশিয়ানদের মাধ্যমে বিক্রয়োত্তর সেবা দিয়ে ওয়ালটন অর্জন করেছে এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
WSMS’র মনিটরিং প্রধান শাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদানে ওয়ালটনের মতো এতো বিশাল সার্ভিস নেটওয়ার্ক দেশে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই। ফ্রিজ, এসি, টেলিভিশনসহ অন্যান্য হোম অ্যাপ্লায়েন্সেসে ওয়ালটন দিচ্ছে হোম সার্ভিস। কল সেন্টারে ফোন করে (হটলাইন নম্বর ১৬২৬৭) ৩৬৫ দিনই মিলছে কাঙ্ক্ষিত সেবা। কল সেন্টারে আসা সমস্যাগুলো নিষ্পত্তি এবং সেবার মান নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে মনিটরিং টিম। যে কোন সোর্স থেকে তথ্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে বাড়ি বাড়ি গিয়েও সার্ভিস দেয়া হচ্ছে। এছাড়া টেলিফোনেও পণ্য সম্পর্কে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হয়।
যে সব এলাকায় এখনো সার্ভিস পয়েন্ট গড়ে উঠেনি, সেখানে চালু রয়েছে ‘ট্র্যাভেলিং সার্ভিস পয়েন্ট’ বা ভ্রাম্যমাণ সার্ভিস সেন্টার। যা প্রয়োজনীয় খুচরা যন্ত্রাংশ, প্রকৌশলী, টেকনিশিয়ানসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ইকুইপমেন্ট দিয়ে সাজানো। প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাহকদের পণ্য আনা-নেয়ার জন্য সারা দেশে ওয়ালটনের ২৫ টি গাড়ি কাজ করছে।
WSMS’র পলিসি ও এইচআরএম প্রধান নাসির হোসেন জানান, বর্তমানে ২ হাজার ৫’শরও বেশি প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান কাজ করছে ওয়ালটনের সার্ভিস পয়েন্টে। কর্মদক্ষতা উন্নয়নে তাদেরকে ভিডিও কনফারেন্সিংসহ বিভিন্ন উপায়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। সেরা কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সার্ভিস প্রোভাইডারদের দেয়া হচ্ছে ক্রেস্ট এবং ইনসেনটিভ। প্রতিবছর কয়েকশ বিএসসি ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীকে ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের আওতায় বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। কয়েকশ বেকারকে ৬ মাসের প্রশিক্ষণে দক্ষ টেকনিশিয়ানে পরিণত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ওয়ালটনের প্রতিটি সার্ভিস পয়েন্টে রয়েছে পত্রিকা ও ম্যাগাজিন, টি-কফি, টিভি, সুন্দর ঝকঝকে পরিবেশ। এক্সিকিউটিভদের উষ্ণ অভ্যর্থনার সঙ্গে থাকছে কাস্টমার ফিডব্যাক বক্স। এর মাধ্যমে বিক্রয়োত্তর সেবার মান সম্পর্কে গ্রাহকরা মতামত বা পরামর্শ দিচ্ছেন। সে মতো ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। বর্তমানে, গ্রাহকরা শর্তসাপেক্ষে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ফ্রিজ, এসি ও টেলিভিশনে ১ বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি পাচ্ছেন। এছাড়া ফ্রিজের কমপ্রেসরে ১০ বছর পর্যন্ত এবং এলইডি টেলিভিশনের প্যানেলে ২ বছরের ওয়ারেন্টি রয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ৩ শতাধিক প্লাজা এবং ১০ হাজারেরও বেশি পরিবেশক আউটলেটের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করছে ওয়ালটন।