ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৬শ কোটি চামড়ার বাজারে সংকট, ক্ষতির আশঙ্কা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ চলতি বছর কোরবানির ঈদে নানা কারণে পশুর চামড়া সংগ্রহের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেননি ট্যানারি মালিকরা। এতে করে চামড়া পাচারের পাশাপাশি অন্তত ৫০০-৬০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হবে বলে ধারনা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এবার ঈদুল আযহায় কোরবানির পশুর চামড়ার বাজার ছিল মন্দা। হাজারীবাগ থেকে সাভারে চামড়ার ফ্যাক্টরিগুলো স্থানান্তর হওয়া, ট্যানারি মালিকরা পোস্তার ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা না দেয়া ও লবনের দাম বেড়ে যাওয়াসহ নান কারণ ছিল এই মন্দার পেছনে। আর চামড়ার কম দামের জন্য ট্যানারির মালিক, পাইকারি, ক্ষুদ্র ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দায় চাপিয়েছেন একে অপরের উপর।

ট্যানারি ব্যবসায়ীদের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি বছর দেশ থেকে প্রায় ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া। এসব চামড়ার অর্ধেকেরও বেশি সংগ্রহ করা হয় কোরবানির ঈদের সময়। কিন্তু এবার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চামড়া সংগ্রহ করতে পারেননি বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

চলতি বছর চামড়া ব্যবসা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নতুন সময়ের সঙ্গে কথা হয় বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)’র সভাপতি শাহীন আহমেদের। তিনি বলেন, এ বছর চামড়া সংগ্রহের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। নগদ টাকার সংকট থাকায় চামড়া কিনতে আমরা অগ্রিম অর্থ দিতে পারিনি। এ কারণে পাইকারি ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা সুবিধামতো বিভিন্ন দরে চামড়া কিনেছেন।

চামড়া পাচারের সম্ভাবনা কতটুকু এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এবার চামড়ার বাজার মন্দা গেছে। তাই চামড়া পাচার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নিজেদের আর্থিক ক্ষতি সম্পর্কে বিটিএ’র সভাপতি বলেন, আমরা এবার চাহিদা মোতাবেক কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করতে পারি। সব মিলিয়ে আমরা এবার অন্তত ৫০০-৬০০ কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হবো।

চলতি বছর সরকারিভাবে কোরবানির গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া সারাদেশে খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ২০ থেকে ২২ টাকা ও বকরির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

তবে রাজধানীর কাঁচা চামড়ার পাইকারি আড়ত লালবাগ ও আমিনবাজারে চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার ৫ থেকে ৭ বর্গফুটের ছোট গরুর চামড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়, ১৪ থেকে ১৫ বর্গফুটের চামড়া ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, ২০ থেকে ২২ বর্গফুটের চামড়া ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বেচা-কেনা হয়েছে। এবার ঢাকায় সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা (প্রতি বর্গফুটে) কম দামে চামড়া বিক্রি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

কয়েকজন কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ট্যানারি মালিকদের কাছে কোটি কোটি টাকা পাওনা হলেও ট্যানারিগুলো সাভারে স্থানান্তরিত হওয়ায় মালিকরা তাদের টাকা পরিশোধ করেনি। এ কারণে তারা চামড়া কেনার জন্য খুচরা ব্যবসায়ীদের টাকা দিতে পারেনি। দেশের বিভিন্ন স্থানেও একই অবস্থা বলে জানান তারা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

৬শ কোটি চামড়ার বাজারে সংকট, ক্ষতির আশঙ্কা

আপডেট টাইম : ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ চলতি বছর কোরবানির ঈদে নানা কারণে পশুর চামড়া সংগ্রহের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেননি ট্যানারি মালিকরা। এতে করে চামড়া পাচারের পাশাপাশি অন্তত ৫০০-৬০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হবে বলে ধারনা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এবার ঈদুল আযহায় কোরবানির পশুর চামড়ার বাজার ছিল মন্দা। হাজারীবাগ থেকে সাভারে চামড়ার ফ্যাক্টরিগুলো স্থানান্তর হওয়া, ট্যানারি মালিকরা পোস্তার ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা না দেয়া ও লবনের দাম বেড়ে যাওয়াসহ নান কারণ ছিল এই মন্দার পেছনে। আর চামড়ার কম দামের জন্য ট্যানারির মালিক, পাইকারি, ক্ষুদ্র ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দায় চাপিয়েছেন একে অপরের উপর।

ট্যানারি ব্যবসায়ীদের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি বছর দেশ থেকে প্রায় ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া। এসব চামড়ার অর্ধেকেরও বেশি সংগ্রহ করা হয় কোরবানির ঈদের সময়। কিন্তু এবার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চামড়া সংগ্রহ করতে পারেননি বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

চলতি বছর চামড়া ব্যবসা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নতুন সময়ের সঙ্গে কথা হয় বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)’র সভাপতি শাহীন আহমেদের। তিনি বলেন, এ বছর চামড়া সংগ্রহের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। নগদ টাকার সংকট থাকায় চামড়া কিনতে আমরা অগ্রিম অর্থ দিতে পারিনি। এ কারণে পাইকারি ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা সুবিধামতো বিভিন্ন দরে চামড়া কিনেছেন।

চামড়া পাচারের সম্ভাবনা কতটুকু এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এবার চামড়ার বাজার মন্দা গেছে। তাই চামড়া পাচার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নিজেদের আর্থিক ক্ষতি সম্পর্কে বিটিএ’র সভাপতি বলেন, আমরা এবার চাহিদা মোতাবেক কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করতে পারি। সব মিলিয়ে আমরা এবার অন্তত ৫০০-৬০০ কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হবো।

চলতি বছর সরকারিভাবে কোরবানির গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া সারাদেশে খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ২০ থেকে ২২ টাকা ও বকরির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

তবে রাজধানীর কাঁচা চামড়ার পাইকারি আড়ত লালবাগ ও আমিনবাজারে চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার ৫ থেকে ৭ বর্গফুটের ছোট গরুর চামড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়, ১৪ থেকে ১৫ বর্গফুটের চামড়া ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, ২০ থেকে ২২ বর্গফুটের চামড়া ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বেচা-কেনা হয়েছে। এবার ঢাকায় সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা (প্রতি বর্গফুটে) কম দামে চামড়া বিক্রি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

কয়েকজন কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ট্যানারি মালিকদের কাছে কোটি কোটি টাকা পাওনা হলেও ট্যানারিগুলো সাভারে স্থানান্তরিত হওয়ায় মালিকরা তাদের টাকা পরিশোধ করেনি। এ কারণে তারা চামড়া কেনার জন্য খুচরা ব্যবসায়ীদের টাকা দিতে পারেনি। দেশের বিভিন্ন স্থানেও একই অবস্থা বলে জানান তারা।