ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাঁচাবাজারে বিক্রি বেড়ে চলেছে ক্রেতারা অসহায়

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে সরবরাহের ঘাটতিকে অজুহাত দেখিয়ে চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। বাজারে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি মিলছে না। পটোল, করলা, ধুন্দল, ঢেঁড়স ও বেগুনসহ সব সবজিই বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। এর মধ্যে টমেটো ও শিম ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কাঁচামরিচের ঝাল কিছুটা কমেছে। এর কেজি ২৫০ টাকা থেকে কমে ২০০ টাকার নিচে চলে এসেছে। তবে পাইকারিতে কিছুটা স্বস্তি এলেও খুচরায় দাম কমার প্রভাব কম লক্ষ্য করা গেছে। ফলে বাড়তি দামের কারণে দিশাহারা হয়ে পড়েছে ক্রেতারা। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে সবজির সরবরাহ কম। তাই দাম বাড়তি। এ ছাড়া পাইকারদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান তারা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা কমেছে। তবে শিগগিরই দাম কমে যাবে। বাজারে মরিচের সরবরাহ বাড়ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ কেজিতে ১৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ২৬০ টাকা দরে। গতকাল কাঁচামরিচের কেজি ২০০ টাকার নিচে চলে এসেছে। জানা গেছে, পাইকারি বাজারে গত সপ্তাহে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন তা কমতে শুরু করেছে। খুচরা বাজারে এখনো আগের দামেই বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, পূজার ছুটিতে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় সরবরাহ ঘাটতি রয়েছে। তাই দাম বেড়ে গেছে। তারা বলছেন, দুই-এক দিনের মধ্যে খুচরা বাজারেও কমবে কাঁচামরিচের দাম।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয় ২২-২৬ টাকায়। একইভাবে প্রতি কেজি বরবটি ৬০-৬২, কাঁকরোল ৫৫-৬০, ঢেঁড়স ৫০-৫৫ ও শিম ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাদা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে। হাইব্রিড টমেটো ১১০ টাকা; শসা ৭০ টাকা; চাল কুমড়া ৫০-৫৫ টাকা; কচুর লতি ৭০ টাকা; পটোল ৬০ টাকা; ঢেঁড়স ৭০ টাকা; ঝিঙ্গা ৭০ টাকা; চিচিঙ্গা ৭০ টাকা; করলা ৬৫ টাকা; পেঁপে ৪০-৫০ টাকা; কচুরমুখী ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ফুলকপি ৩৫ টাকা; বাঁধাকপি ৩০ টাকা এবং লেবু হালি প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা; পালং শাক আঁটি প্রতি ২০ টাকা; লালশাক ২০ টাকা; পুঁইশাক ৩০ টাকা এবং লাউশাক ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কাওরানবাজারে বাজার করতে আসা শফিক বলেন, কি কিনবো। কোনোভাবেই বাজেট কুলানো যাচ্ছে না। সবকিছুর দাম বেশি। শুধু কী তাই, বাচ্চাদের খাবারের দামও বেড়েছে। আমরা পড়ছি গ্যাঁড়াকলে। না, শান্তি মতো থাকতে পারছি, না আয় বাড়াতে পারছি। কেউ তো দেখার নাই।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগে থেকে চালের দাম কেজিতে ১-২ টাকা কমলে পরে আর কমেনি। সেই বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা ও পারিজা চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৭-৪৮ টাকা দরে। এ ছাড়া মিনিকেট কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে (ভালো মানের) ৬২ টাকা দরে, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৮ টাকা, বিআর-২৮ ৫৬ টাকা, ভারতীয় বিআর-২৮ ৫০ টাকা,  উন্নত মানের নাজিরশাইল ৭০ টাকা, নাজিরশাইল (নরমাল) ৬৫, হাস্কি ৫৬, পাইজাম চাল ৫২ টাকা, বাসমতী ৬৫-৭০ টাকা, কাটারিভোগ ৭০-৭৫ টাকা এবং পোলাও চাল ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মুদি পণ্যের বাজারে ব্র্যান্ড ভেদে ৫ লিটারের বোতল ৫৩০-৫৪০ টাকা; প্রতি লিটারে ১-২ টাকা বেড়ে ১০৭ টাকা থেকে ১০৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি রুই মাছ ২৮০-৪০০ টাকা, সরপুঁটি ৩৮০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২৫০-৩০০ টাকা, চাষের কৈ ৩০০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১২০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা, ৭০০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি ইলিশ ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা দরে। লেয়ার মুরগি ১৮০ টাকা; দেশি মুরগি প্রতি পিস ৪৫০ টাকা; পাকিস্তানি লাল মুরগি কেজি প্রতি ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

কাঁচাবাজারে বিক্রি বেড়ে চলেছে ক্রেতারা অসহায়

আপডেট টাইম : ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে সরবরাহের ঘাটতিকে অজুহাত দেখিয়ে চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। বাজারে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি মিলছে না। পটোল, করলা, ধুন্দল, ঢেঁড়স ও বেগুনসহ সব সবজিই বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। এর মধ্যে টমেটো ও শিম ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কাঁচামরিচের ঝাল কিছুটা কমেছে। এর কেজি ২৫০ টাকা থেকে কমে ২০০ টাকার নিচে চলে এসেছে। তবে পাইকারিতে কিছুটা স্বস্তি এলেও খুচরায় দাম কমার প্রভাব কম লক্ষ্য করা গেছে। ফলে বাড়তি দামের কারণে দিশাহারা হয়ে পড়েছে ক্রেতারা। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে সবজির সরবরাহ কম। তাই দাম বাড়তি। এ ছাড়া পাইকারদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান তারা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা কমেছে। তবে শিগগিরই দাম কমে যাবে। বাজারে মরিচের সরবরাহ বাড়ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ কেজিতে ১৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ২৬০ টাকা দরে। গতকাল কাঁচামরিচের কেজি ২০০ টাকার নিচে চলে এসেছে। জানা গেছে, পাইকারি বাজারে গত সপ্তাহে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন তা কমতে শুরু করেছে। খুচরা বাজারে এখনো আগের দামেই বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, পূজার ছুটিতে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় সরবরাহ ঘাটতি রয়েছে। তাই দাম বেড়ে গেছে। তারা বলছেন, দুই-এক দিনের মধ্যে খুচরা বাজারেও কমবে কাঁচামরিচের দাম।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয় ২২-২৬ টাকায়। একইভাবে প্রতি কেজি বরবটি ৬০-৬২, কাঁকরোল ৫৫-৬০, ঢেঁড়স ৫০-৫৫ ও শিম ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাদা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে। হাইব্রিড টমেটো ১১০ টাকা; শসা ৭০ টাকা; চাল কুমড়া ৫০-৫৫ টাকা; কচুর লতি ৭০ টাকা; পটোল ৬০ টাকা; ঢেঁড়স ৭০ টাকা; ঝিঙ্গা ৭০ টাকা; চিচিঙ্গা ৭০ টাকা; করলা ৬৫ টাকা; পেঁপে ৪০-৫০ টাকা; কচুরমুখী ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ফুলকপি ৩৫ টাকা; বাঁধাকপি ৩০ টাকা এবং লেবু হালি প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা; পালং শাক আঁটি প্রতি ২০ টাকা; লালশাক ২০ টাকা; পুঁইশাক ৩০ টাকা এবং লাউশাক ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কাওরানবাজারে বাজার করতে আসা শফিক বলেন, কি কিনবো। কোনোভাবেই বাজেট কুলানো যাচ্ছে না। সবকিছুর দাম বেশি। শুধু কী তাই, বাচ্চাদের খাবারের দামও বেড়েছে। আমরা পড়ছি গ্যাঁড়াকলে। না, শান্তি মতো থাকতে পারছি, না আয় বাড়াতে পারছি। কেউ তো দেখার নাই।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগে থেকে চালের দাম কেজিতে ১-২ টাকা কমলে পরে আর কমেনি। সেই বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা ও পারিজা চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৭-৪৮ টাকা দরে। এ ছাড়া মিনিকেট কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে (ভালো মানের) ৬২ টাকা দরে, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৮ টাকা, বিআর-২৮ ৫৬ টাকা, ভারতীয় বিআর-২৮ ৫০ টাকা,  উন্নত মানের নাজিরশাইল ৭০ টাকা, নাজিরশাইল (নরমাল) ৬৫, হাস্কি ৫৬, পাইজাম চাল ৫২ টাকা, বাসমতী ৬৫-৭০ টাকা, কাটারিভোগ ৭০-৭৫ টাকা এবং পোলাও চাল ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মুদি পণ্যের বাজারে ব্র্যান্ড ভেদে ৫ লিটারের বোতল ৫৩০-৫৪০ টাকা; প্রতি লিটারে ১-২ টাকা বেড়ে ১০৭ টাকা থেকে ১০৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি রুই মাছ ২৮০-৪০০ টাকা, সরপুঁটি ৩৮০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২৫০-৩০০ টাকা, চাষের কৈ ৩০০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১২০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা, ৭০০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি ইলিশ ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা দরে। লেয়ার মুরগি ১৮০ টাকা; দেশি মুরগি প্রতি পিস ৪৫০ টাকা; পাকিস্তানি লাল মুরগি কেজি প্রতি ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে।