ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারিভাবে ধান-চাল সংগহের সুফল পাচ্ছেন না কৃষকরা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ উত্তরের খাদ্য উদ্বৃত্ত একটি জেলা নওগাঁ। জেলায় প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়। প্রতিটি মওসুমেই সরকারি ভাবে উল্লেখযোগ্য পরিমান ধান-চাল সংগ্রহ করা হয় এ জেলা থেকে। কিন্তু সময় মতো সরকারি ভাবে ধান সংগ্রহ না করায় প্রতি বছরই লোকশান গুনছেন কৃষকরা। আর লাভবান হচ্ছেন মজুদদাররা।

কৃষকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলান। আর এই ফসলকে ঘিরেই তাদের সকল স্বপ্ন। কিন্তু প্রতি বছরই ফসল ফলে লাভবান হতে পাড়ছেন না কৃষকরা। লোকশান যেনো কিছুতেই ছাড়ছে না পিছু।  কৃষকের ধানের নায্য দাম নিশ্চিৎ করার লক্ষ্যে ধান-চালের দাম নির্ধারণ করে সরকারি ভাবে প্রতিবছরই সংগ্রহ করা হচ্ছে ধান-চাল। তবে তা সময় মতো না হওয়ায় এর সুফল পাচ্ছেন না প্রান্তিক কৃষকরা। ধান কাটা মাড়াই মওসুম শুরু হওয়ার দেড় থেকে দু’মাস পর সরকারি ভাবে শুরু হয় সংগ্রহ কার্যক্রম। আর এই সময় টুকু ধান নিজের গোলায় সংগ্রহ করতে পারেন না কৃষকরা। নানা প্রয়োজন আর ঋণের বোঝা হালকা করতে বিক্রি করতে হয় ধান।

দেরিতে সরকারি ভাবে ধান-চাল সংগ্রহ শুরু হওয়ায় এর সুফল ভোগ করছেন মজুদদাররা। মওসুমের শুরুতে কম দামে ধান ক্রয় করে মজুদ করছেন এক শ্রেণীর মুনাফালুভি মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা। তারা তৈরী করছেন কৃত্তিম সংকট। দেরিতে সরকারি ভাবে সংগ্রহ শুরু হওয়ায় কৃষকরা ধান দিতে পাড়ছেন না সরকারি গুদামে। সরকারি সংগ্রহ শুরু ও কৃত্তিম সংকটের ফলে ধান-চালের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মজুদদাররা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আস্তে আস্তে উচ্চ মূল্যে ধান ছাড়ছেন বাজারে। এতে করে এক দিকে যেমন সরকারি সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা হচ্ছে ব্যার্থ অন্যদিকে নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষক।

কৃষকদের অভিযোগ সরকারি ভাবে ধান চাল সংগ্রহের খবর পান না তারা। কৃষকের কাছ থেকে কৃষি কার্ড সংগ্রহ করে মিলার ও ব্যবসায়ীরা ধান দিচ্ছেন সরকারি গুদামে। তারা বলছেন মওসুমের শুরুতে সরকারি ভাবে ধান-চাল সংগ্রহ করলে লাভবান হতেন তারা। তাই মওসুমের শুরুতেই সরকারি ভাবে তাদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার দাবী করেন কৃষকরা।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সালাম জানান, আমন উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা এখনো পাওয়া যায়নি। উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা হাতে পেলে দ্রুত সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন খাদ্য বিভাগের এই কর্মকর্তা।

কৃষি বিভাগের হিসেবে নওগাঁ জেলায় এবার ১ লাখ ৯৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। কৃষকদের উৎপাদিত ধান সঠিক সময় কিনবেন সরকার আর নায্য দাম পাবে কৃষক এমনটিই দাবী তাদের।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

সরকারিভাবে ধান-চাল সংগহের সুফল পাচ্ছেন না কৃষকরা

আপডেট টাইম : ১১:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ উত্তরের খাদ্য উদ্বৃত্ত একটি জেলা নওগাঁ। জেলায় প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়। প্রতিটি মওসুমেই সরকারি ভাবে উল্লেখযোগ্য পরিমান ধান-চাল সংগ্রহ করা হয় এ জেলা থেকে। কিন্তু সময় মতো সরকারি ভাবে ধান সংগ্রহ না করায় প্রতি বছরই লোকশান গুনছেন কৃষকরা। আর লাভবান হচ্ছেন মজুদদাররা।

কৃষকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলান। আর এই ফসলকে ঘিরেই তাদের সকল স্বপ্ন। কিন্তু প্রতি বছরই ফসল ফলে লাভবান হতে পাড়ছেন না কৃষকরা। লোকশান যেনো কিছুতেই ছাড়ছে না পিছু।  কৃষকের ধানের নায্য দাম নিশ্চিৎ করার লক্ষ্যে ধান-চালের দাম নির্ধারণ করে সরকারি ভাবে প্রতিবছরই সংগ্রহ করা হচ্ছে ধান-চাল। তবে তা সময় মতো না হওয়ায় এর সুফল পাচ্ছেন না প্রান্তিক কৃষকরা। ধান কাটা মাড়াই মওসুম শুরু হওয়ার দেড় থেকে দু’মাস পর সরকারি ভাবে শুরু হয় সংগ্রহ কার্যক্রম। আর এই সময় টুকু ধান নিজের গোলায় সংগ্রহ করতে পারেন না কৃষকরা। নানা প্রয়োজন আর ঋণের বোঝা হালকা করতে বিক্রি করতে হয় ধান।

দেরিতে সরকারি ভাবে ধান-চাল সংগ্রহ শুরু হওয়ায় এর সুফল ভোগ করছেন মজুদদাররা। মওসুমের শুরুতে কম দামে ধান ক্রয় করে মজুদ করছেন এক শ্রেণীর মুনাফালুভি মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা। তারা তৈরী করছেন কৃত্তিম সংকট। দেরিতে সরকারি ভাবে সংগ্রহ শুরু হওয়ায় কৃষকরা ধান দিতে পাড়ছেন না সরকারি গুদামে। সরকারি সংগ্রহ শুরু ও কৃত্তিম সংকটের ফলে ধান-চালের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মজুদদাররা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আস্তে আস্তে উচ্চ মূল্যে ধান ছাড়ছেন বাজারে। এতে করে এক দিকে যেমন সরকারি সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা হচ্ছে ব্যার্থ অন্যদিকে নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষক।

কৃষকদের অভিযোগ সরকারি ভাবে ধান চাল সংগ্রহের খবর পান না তারা। কৃষকের কাছ থেকে কৃষি কার্ড সংগ্রহ করে মিলার ও ব্যবসায়ীরা ধান দিচ্ছেন সরকারি গুদামে। তারা বলছেন মওসুমের শুরুতে সরকারি ভাবে ধান-চাল সংগ্রহ করলে লাভবান হতেন তারা। তাই মওসুমের শুরুতেই সরকারি ভাবে তাদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার দাবী করেন কৃষকরা।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সালাম জানান, আমন উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা এখনো পাওয়া যায়নি। উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা হাতে পেলে দ্রুত সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন খাদ্য বিভাগের এই কর্মকর্তা।

কৃষি বিভাগের হিসেবে নওগাঁ জেলায় এবার ১ লাখ ৯৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। কৃষকদের উৎপাদিত ধান সঠিক সময় কিনবেন সরকার আর নায্য দাম পাবে কৃষক এমনটিই দাবী তাদের।