ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আসছে রমজান বাড়ছে পণ্যের দাম

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রতিবছরের মতো এবছরও রমজান আসার আগেই বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। বাণিজ্যমন্ত্রীর কোনো ঘোষণাই কাজে আসছে না। গত দু’সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে ৯টি পণ্যের দাম। শেষমেষ বেড়েছে কমতে থাকা পেঁয়াজের দাম। কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। এর আগে বেড়েছে সব ধরনের মাছ, ডিম, আলু, চাল, কাকরল, ব্রয়লার মুরগি, কাঁচা পেঁপে ও বেগুনের দাম।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাড্ডা, মহাখালী, মতিঝিল ও কারওয়ানবাজারের আশপাশ এলাকা ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। রাজধানীর বাজারে হঠাৎই তিনদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। ফলে এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাকে এখন গুণতে হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি মূল্য বেশি, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম, এরকম নানান অজুহাতে আড়ত ও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। যার কারণে খুচরা দামও বেড়েছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ বেশি থাকা সত্ত্বেও বাড়তি দাম নিচ্ছে বিক্রেতারা। রমজানকে সামনে রেখেই দাম বাড়াচ্ছে তারা। জাহিদ হোসেন নামের এক ক্রেতা বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, পবিত্র মাস রমজান আসতেই একশ্রেণির অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ী কৌশলে পণ্যের দাম বাড়ায়।

তারা আস্তে আস্তে প্রায় সব পণ্যেরই দাম বাড়ায়। রাজধানীর খুচরা বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৫ টাকায় ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ২৮-৩৫ টাকা। গত তিন থেকে চারদিন আগেও দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩২ থেকে ৩৫ টাকা আর আমদানি পেঁয়াজের দাম ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করা সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক মাসে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে গড়ে প্রায় ১৫ শতাংশ।

এ সময়ে দেশি পেঁয়াজের দাম ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আর এক সপ্তাহে কেজিতে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজ আট থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ গতকাল প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪৫ টাকায় ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৩০-৩৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিতে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা আর আমদানিকৃত পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকা। চশবাজার রহমতগঞ্জ আল-আমিন ট্রেডার্সের মালিক বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, রমজানের কারণে দাম বাড়ানো হয়নি।

ভালো মানের পেঁয়াজ বাজারে আসছে বলে দাম বাড়ছে। যে পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সে পেঁয়াজ মাসের দিক থেকে ভালো বলে দাম বেড়েছে। রমজানের জন্য দাম বাড়ানো হয়নি। পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বাড্ডা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মামুন বলেন, গত তিন-চারদিন ধরে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। দেশি-বিদেশি সব ধরনের পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৫ টাকা বেশিতে কিনতে হচ্ছে। বেশি দামে কিনে খুচরায়ও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হয়। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।

এদিকে ঢাকার কারওয়ানবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বলেন, চাহিদা ও সরবরাহ বিবেচনায় কাঁচাবাজারের পণ্যের দাম সবসময় ওঠানামা করে। গত কয়েক দিন ধরে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি পাল্লা (পাঁচ কেজি) ১২ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির মাংস কেজিতে বেড়েছে ২০ ও পাকিস্তানি কক ও সোনালি মুরগির মাংসের দাম পিস প্রতি বেড়েছে ৩০-৪০ টাকা। বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা গত সপ্তাহ আগে ছিল ১৪০ টাকা।

১৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া পাকিস্তানি কক বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায় এবং ২শ টাকায় বিক্রি হওয়া প্রতি পিস সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে ৩০-৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ৬০-৭০ টাকা হয়েছে। এছাড়া ৩০ টাকা বিক্রি হওয়া কাঁচা পেঁপে এক লাফে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। অন্যদিকে চালের বাজারের আগুন কমার কোনো লক্ষণ নেই। দীর্ঘদিন ধরেই চালের দাম এখনও ঊর্ধ্বগতি চলছে। সর্বশেষ খুচরা মূল্য অনুযায়ী চালের বাজার দাম, কেজি প্রতি নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭২, ১ নম্বর মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৫, সাধারণ মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২, বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ ও স্বর্ণা এবং পারিজা ৪৫ টাকায়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

আসছে রমজান বাড়ছে পণ্যের দাম

আপডেট টাইম : ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ মে ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রতিবছরের মতো এবছরও রমজান আসার আগেই বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। বাণিজ্যমন্ত্রীর কোনো ঘোষণাই কাজে আসছে না। গত দু’সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে ৯টি পণ্যের দাম। শেষমেষ বেড়েছে কমতে থাকা পেঁয়াজের দাম। কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। এর আগে বেড়েছে সব ধরনের মাছ, ডিম, আলু, চাল, কাকরল, ব্রয়লার মুরগি, কাঁচা পেঁপে ও বেগুনের দাম।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাড্ডা, মহাখালী, মতিঝিল ও কারওয়ানবাজারের আশপাশ এলাকা ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। রাজধানীর বাজারে হঠাৎই তিনদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। ফলে এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাকে এখন গুণতে হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি মূল্য বেশি, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম, এরকম নানান অজুহাতে আড়ত ও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। যার কারণে খুচরা দামও বেড়েছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ বেশি থাকা সত্ত্বেও বাড়তি দাম নিচ্ছে বিক্রেতারা। রমজানকে সামনে রেখেই দাম বাড়াচ্ছে তারা। জাহিদ হোসেন নামের এক ক্রেতা বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, পবিত্র মাস রমজান আসতেই একশ্রেণির অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ী কৌশলে পণ্যের দাম বাড়ায়।

তারা আস্তে আস্তে প্রায় সব পণ্যেরই দাম বাড়ায়। রাজধানীর খুচরা বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৫ টাকায় ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ২৮-৩৫ টাকা। গত তিন থেকে চারদিন আগেও দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩২ থেকে ৩৫ টাকা আর আমদানি পেঁয়াজের দাম ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করা সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক মাসে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে গড়ে প্রায় ১৫ শতাংশ।

এ সময়ে দেশি পেঁয়াজের দাম ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আর এক সপ্তাহে কেজিতে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজ আট থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ গতকাল প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪৫ টাকায় ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৩০-৩৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিতে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা আর আমদানিকৃত পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকা। চশবাজার রহমতগঞ্জ আল-আমিন ট্রেডার্সের মালিক বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, রমজানের কারণে দাম বাড়ানো হয়নি।

ভালো মানের পেঁয়াজ বাজারে আসছে বলে দাম বাড়ছে। যে পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সে পেঁয়াজ মাসের দিক থেকে ভালো বলে দাম বেড়েছে। রমজানের জন্য দাম বাড়ানো হয়নি। পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বাড্ডা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মামুন বলেন, গত তিন-চারদিন ধরে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। দেশি-বিদেশি সব ধরনের পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৫ টাকা বেশিতে কিনতে হচ্ছে। বেশি দামে কিনে খুচরায়ও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হয়। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।

এদিকে ঢাকার কারওয়ানবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বলেন, চাহিদা ও সরবরাহ বিবেচনায় কাঁচাবাজারের পণ্যের দাম সবসময় ওঠানামা করে। গত কয়েক দিন ধরে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি পাল্লা (পাঁচ কেজি) ১২ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির মাংস কেজিতে বেড়েছে ২০ ও পাকিস্তানি কক ও সোনালি মুরগির মাংসের দাম পিস প্রতি বেড়েছে ৩০-৪০ টাকা। বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা গত সপ্তাহ আগে ছিল ১৪০ টাকা।

১৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া পাকিস্তানি কক বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায় এবং ২শ টাকায় বিক্রি হওয়া প্রতি পিস সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে ৩০-৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ৬০-৭০ টাকা হয়েছে। এছাড়া ৩০ টাকা বিক্রি হওয়া কাঁচা পেঁপে এক লাফে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। অন্যদিকে চালের বাজারের আগুন কমার কোনো লক্ষণ নেই। দীর্ঘদিন ধরেই চালের দাম এখনও ঊর্ধ্বগতি চলছে। সর্বশেষ খুচরা মূল্য অনুযায়ী চালের বাজার দাম, কেজি প্রতি নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭২, ১ নম্বর মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৫, সাধারণ মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২, বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ ও স্বর্ণা এবং পারিজা ৪৫ টাকায়।