যেসব নারী মোটা এবং উচ্চ পরিমাণে চর্বি ও শর্করাযুক্ত খাবার খান তাদের পরবর্তী একাধিক প্রজন্মের মেটাবোলিক বা বিপাকীয় সমস্যা তৈরি হতে পারে। এমনকি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করলে তাতেও এই ঝুঁকি থাকে। মার্কিন নতুন এক গবেষণায় এমনটি দাবি করেছেন গবেষকেরা।
পূর্ববর্তী গবেষণায় গর্ভাবস্থায় নারীদের স্বাস্থ্যের সঙ্গে ভবিষ্যতে সন্তানের ওজনের বেশি-কম হওয়ার যোগসূত্র পেয়েছেন গবেষকেরা।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে প্রথম বারের মতো দেখতে পান, গর্ভবতী হওয়ার আগেও একজন স্থূলকায় নারীর জিনগত অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে। যা পরবর্তীকালে রক্তনালীর মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে কমপক্ষে তিন প্রজন্ম পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে।
গবেষকেরা বলেন, “স্থূলতা বা মোটা হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধির কারণে টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ দেখা দিতে পারে।”
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কেলি এইচ মোলে বলেন, “আমাদের গবেষণায় ইঙ্গিত করা হয়েছে, মায়ের স্থূলতা পরবর্তী প্রজন্মের স্বাস্থ্যের ক্ষতি সাধন করতে পারে।”
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, মায়ের স্থূলতা এবং বিপাকীয় সমস্যার সঙ্গে এর সম্পর্ক মাইটোকনন্ড্রিয়া ডিএনএ-এর মাধ্যমে অনিষিক্ত উসাইট(ডিম্বকোষ) বা ডিম্বানুতে দেখা দিতে পারে। মাইটোকনন্ড্রিয়াকে কোষের পাওয়ার হাউস বলা হয়। কারণ এটি মেটাবোলিজম এবং অন্যান্য বায়োকেমিক্যাল প্রক্রিয়ার জন্য শক্তি সরবরাহ করে।
গবেষকেরা বলেন, এই ধরনের কোষের গঠনে নিজস্ব জিন থাকে, যা শুধু মায়েদের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পায়, বাবাদের কাছ থেকে না।
কেলি এইচ মোলে বলেন, “আমাদের গবেষণায় প্রথমবারের মতো দেখানো হয়েছে, গর্ভবতী মা ইঁদুরের মেটাবোলিক সিনড্রোম অস্বাভাবিক মাইটোকনন্ড্রিয়া নারীদের রক্তনালীর মাধ্যমে পরবর্তী তিন প্রজন্ম পর্যন্ত ছড়াতে পারে।”
মোলে আরও বলেন, “বাবা-মায়ের এই বিষয়টি টুকে রাখা মানুষদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ যে, মা-বাবার খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে যেসব সন্তানের খাদ্যাভ্যাসের প্রচুর মিল রয়েছে তাদের ম্যাটারনেল মেটাবোলিক সিনড্রোমে প্রভাব অনেক বেশি।”