ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশকে সংকটে ফেলার নির্বাচন করতে চাই না: ইসি রাশেদা

দেশকে সংকটে ফেলবে, নির্বাচন কমিশন এমন নির্বাচন করতে চায় না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা। বুধবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

৯৬-এর নির্বাচনের সূত্র ধরে ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, ওই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় সেই নির্বাচন নিয়ে পরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। পরে ওই নির্বাচন বাতিল হয়ে যাওয়ায় রাষ্ট্রের অনেক অপচয় হয়েছে। আমরা চাই না সেটার পুনরাবৃত্তি ঘটুক। এবারের নির্বাচন নিয়ে কোনো বিতর্ক তৈরি হোক। তাই আমরা এমন নির্বাচন করতে চাই, যেন সেটি নিয়ে পরবর্তীতে কোনো প্রশ্ন উঠে।

এদেশের জনগণসহ আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করাই আমাদের লক্ষ্য। ভালো নির্বাচন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর দেখেও আমার মনে হচ্ছে সরকারও চাইছে একটা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন হোক।

ভোটের পরিবেশ কেমন হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোট এখন যেটা হচ্ছে সেটা উৎসবমুখর ও সুন্দর হবে, এটা আমি বলতে পারি।

দলীয় সরকারের অধীনে ভোট সুষ্ঠু হবে কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সেটা বলার সময় এখনো আসেনি। তবে এর আগেও দলীয় সরকারের অধীনে আমরা জাতীয় নির্বাচন করেছি। আগে দেখেন কী হয়। তখন বলা যাবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কিনা। তবে আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করছি। আমাদের কোন বাধা নেই। আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

একটি বড় দলের নির্বাচনে না আসার বিষয়টাকে কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলগুলোর জন্য ভোটে আসা না আসা তাদের স্বাধীন ইচ্ছা কিন্তু সেজন্য তো ভোট থেমে থাকবে না। আর ভোটকে কোনোভাবে প্রতিহত করা যাবে না এবং কোনো নাশকতামূলক কাজ করা যাবে না। এগুলো যদি তারা করে, তাহলে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।

রাশেদা সুলতানা আরও বলেন, তবে সব দল নির্বাচনে এলে একটা স্বস্তির বিষয় হতো। উৎসবমুখর হতো। পূর্ণতা পেত। এখন সেটা অতোটা নেই সেটা তো আর অস্বীকার করার কিছু নেই। যেটুকু পরিস্থিতি ঘোলা হয়েছে সেটা রাজনৈতিক বিভাজনের মাধ্যমে হয়েছে। আমাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।

বিএনপি নেতাদের জেলে রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি পলিটিক্যাল বিষয়। কেউ নির্বাচনে না আসলে তাদের ব্যাপার। তবে ভোটকে প্রতিহত করা অসাংবিধানিক কাজ।

রাশেদা সুলতানা বলেন, নির্বাচন চলাকালীন যে কোনো অনিয়ম দেখা হলেই অ্যাকশনে যাওয়া হবে। কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা কোনো অনিয়ম মানি নাই, সামনে মানবো না। অনিয়ম দেখা দিলেই আমরা অ্যাকশনে যাবো। প্রার্থিতা বাতিল করার মতো অবস্থা হলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। এমনকি ভোটের দিনও যদি কোনো অনিয়ম হয় প্রয়োজনে সেই কেন্দ্রে ভোট বাতিল করে দেওয়া হবে। আপনারা দেখেছেন আমরা গাইবান্ধায় ভোট বাতিল করেছি।

তিনি বলেন, আমাদের যতগুলো আয়োজন সব আয়োজনের মূল্য উদ্দেশ্য শান্তি-শৃঙ্খলার সঙ্গে ভোট পরিচালনা করা। পরিবেশ সুন্দর করার জন্য ও সবাই যাতে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারে সেজন্যই সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। আমরা যতটুকু বাইরের পরিবেশ দেখেছি তাতে মনে হয়েছে ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

রাশেদা সুলতানা বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আমরা বদ্ধপরিকর। যে কোনো মূল্যে আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য করতে চাই।

সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে ইসি রাশেদা বলেন, জনগণের চাওয়া সেনাবাহিনী নামুক। সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করার জন্য তাদের নামানো হয়েছে। ভোট উৎসবমুখর হবে।

ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কেমন হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনার বিষয়টি। সেজন্য বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা প্রচার করে যাচ্ছি। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রের প্রাণ, ভোটাররা না থাকলে নির্বাচন নিষ্প্রাণ হয়ে যাবে। তবে আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে যেসব তথ্য পাচ্ছি তাতে আমরা আশাবাদী ভোটকেন্দ্রে অনেক ভোটার আসবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

দেশকে সংকটে ফেলার নির্বাচন করতে চাই না: ইসি রাশেদা

আপডেট টাইম : ০৫:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৪

দেশকে সংকটে ফেলবে, নির্বাচন কমিশন এমন নির্বাচন করতে চায় না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা। বুধবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

৯৬-এর নির্বাচনের সূত্র ধরে ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, ওই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় সেই নির্বাচন নিয়ে পরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। পরে ওই নির্বাচন বাতিল হয়ে যাওয়ায় রাষ্ট্রের অনেক অপচয় হয়েছে। আমরা চাই না সেটার পুনরাবৃত্তি ঘটুক। এবারের নির্বাচন নিয়ে কোনো বিতর্ক তৈরি হোক। তাই আমরা এমন নির্বাচন করতে চাই, যেন সেটি নিয়ে পরবর্তীতে কোনো প্রশ্ন উঠে।

এদেশের জনগণসহ আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করাই আমাদের লক্ষ্য। ভালো নির্বাচন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর দেখেও আমার মনে হচ্ছে সরকারও চাইছে একটা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন হোক।

ভোটের পরিবেশ কেমন হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোট এখন যেটা হচ্ছে সেটা উৎসবমুখর ও সুন্দর হবে, এটা আমি বলতে পারি।

দলীয় সরকারের অধীনে ভোট সুষ্ঠু হবে কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সেটা বলার সময় এখনো আসেনি। তবে এর আগেও দলীয় সরকারের অধীনে আমরা জাতীয় নির্বাচন করেছি। আগে দেখেন কী হয়। তখন বলা যাবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কিনা। তবে আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করছি। আমাদের কোন বাধা নেই। আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

একটি বড় দলের নির্বাচনে না আসার বিষয়টাকে কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলগুলোর জন্য ভোটে আসা না আসা তাদের স্বাধীন ইচ্ছা কিন্তু সেজন্য তো ভোট থেমে থাকবে না। আর ভোটকে কোনোভাবে প্রতিহত করা যাবে না এবং কোনো নাশকতামূলক কাজ করা যাবে না। এগুলো যদি তারা করে, তাহলে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।

রাশেদা সুলতানা আরও বলেন, তবে সব দল নির্বাচনে এলে একটা স্বস্তির বিষয় হতো। উৎসবমুখর হতো। পূর্ণতা পেত। এখন সেটা অতোটা নেই সেটা তো আর অস্বীকার করার কিছু নেই। যেটুকু পরিস্থিতি ঘোলা হয়েছে সেটা রাজনৈতিক বিভাজনের মাধ্যমে হয়েছে। আমাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।

বিএনপি নেতাদের জেলে রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি পলিটিক্যাল বিষয়। কেউ নির্বাচনে না আসলে তাদের ব্যাপার। তবে ভোটকে প্রতিহত করা অসাংবিধানিক কাজ।

রাশেদা সুলতানা বলেন, নির্বাচন চলাকালীন যে কোনো অনিয়ম দেখা হলেই অ্যাকশনে যাওয়া হবে। কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা কোনো অনিয়ম মানি নাই, সামনে মানবো না। অনিয়ম দেখা দিলেই আমরা অ্যাকশনে যাবো। প্রার্থিতা বাতিল করার মতো অবস্থা হলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। এমনকি ভোটের দিনও যদি কোনো অনিয়ম হয় প্রয়োজনে সেই কেন্দ্রে ভোট বাতিল করে দেওয়া হবে। আপনারা দেখেছেন আমরা গাইবান্ধায় ভোট বাতিল করেছি।

তিনি বলেন, আমাদের যতগুলো আয়োজন সব আয়োজনের মূল্য উদ্দেশ্য শান্তি-শৃঙ্খলার সঙ্গে ভোট পরিচালনা করা। পরিবেশ সুন্দর করার জন্য ও সবাই যাতে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারে সেজন্যই সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। আমরা যতটুকু বাইরের পরিবেশ দেখেছি তাতে মনে হয়েছে ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

রাশেদা সুলতানা বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আমরা বদ্ধপরিকর। যে কোনো মূল্যে আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য করতে চাই।

সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে ইসি রাশেদা বলেন, জনগণের চাওয়া সেনাবাহিনী নামুক। সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করার জন্য তাদের নামানো হয়েছে। ভোট উৎসবমুখর হবে।

ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কেমন হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনার বিষয়টি। সেজন্য বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা প্রচার করে যাচ্ছি। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রের প্রাণ, ভোটাররা না থাকলে নির্বাচন নিষ্প্রাণ হয়ে যাবে। তবে আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে যেসব তথ্য পাচ্ছি তাতে আমরা আশাবাদী ভোটকেন্দ্রে অনেক ভোটার আসবে।