বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আগামী সংসদ নির্বাচন কাছে চলে আসছে। রাজনীতিতে তাই আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে বললেন সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেন, দলে তোমাকে খুব প্রয়োজন, তুমি তো দলের সম্পদ। মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে গত মঙ্গলবার দীর্ঘদিন দলীয় কর্মকাণ্ডের বাইরে থাকা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে একান্তে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী তার সঙ্গে একান্তে প্রায় ১৫ মিনিট কথা বলেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর গত ছয় মাস রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে নিজেকে এক প্রকার গুটিয়ে নেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। গত সোমবার এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে সৈয়দ আশরাফ নিজেও বলেন, ‘আমি অনেকদিন রাজনীতির মাঠে ছিলাম না। আজ থেকে আবার শুরু করলাম।’
এ প্রসঙ্গে সৈয়দ আশরাফ বলেছেন, ‘ক্যাবিনেট মিটিং এর পর প্রধানমন্ত্রী তার কক্ষে ডেকে পাঠান। তিনি আমার শরীর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন। আর কিছু দায়িত্ব দিলেন।’ কী দায়িত্ব- সে সম্পর্কে সৈয়দ আশরাফ কোনে মন্তব্য করেননি। বলেছেন, ‘থাক না এসব।’ তবে একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৈয়দ আশরাফকে বিরোধী দল বিশেষ করে বিএনপির সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যের জবাব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। মাসে অন্তত দুবার তাকে মিডিয়ার সামনে বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে কথা বলার জন্য বলেছেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্যকে বলেছেন, ‘সাধারণ মানুষ তোমাকে পছন্দ করে, ভালো জানে। তুমি তো দলের অ্যাসেট। নির্বাচনের আগে তোমাকে দলের প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, ‘একান্ত কথা একান্তই থাক।’ তবে তিনি বলেন, ‘আমার শরীরে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের রক্ত। এই রক্ত কখনও বেঈমানী করে না।’ তিনি বলেন, ‘আমার বাবা বঙ্গবন্ধুর জন্য জীবন দিয়েছেন, আমিও প্রয়োজনে শেখ হাসিনার জন্য জীবন দেবো।’
২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের সময় পাদপ্রদীপে আসেন সৈয়দ আশরাফ। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি সংস্কারপন্থীদের বিপরীতে শেখ হাসিনার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন। যাদের কারণে আওয়ামী লীগ অনিবার্য ভাঙন থেকে সে সময় রক্ষা পেয়েছিল, সৈয়দ আশরাফ তাদের অন্যতম। ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলে তিনি স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০৯ এর কাউন্সিলে তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এসময় মন্ত্রণালয়ে অনুপস্থিত থাকাসহ, নেতাকর্মীদের সাক্ষাৎ না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু দলের মধ্যে এসব অভিযোগ সত্ত্বেও দলের বাইরে সাধারণ মানুষের মধ্যে তিনি সৎ এবং নির্লোভ রাজনীতিবিদের প্রতীক হয়ে ওঠেন। তার যে কোন বক্তব্যই মানুষের কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পায়।
এদিকে ঢাকা ট্রিবিউনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ও চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে সৈয়দ আশরাফের। নির্বাচনের বছরে তাই তাকে আরো ‘প্রোএ্যাক্টিভ’ হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিএনপিকে রাজনৈতিক মোকাবেলায় তাকে আরো ‘সরব’ হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহে অন্তত দুই মিডিয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে বলেছেন। আশরাফও প্রধানমন্ত্রীকে কথা দিয়েছেন দলের প্রয়োজনে যা কিছু করার তা তিনি করবেন। ঢাকা ট্রিবিউন/বাংলাদেশ নিউজ আওয়ার অবলম্বনে