বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ গত বছর ঢলের পানিতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল হাওরবাসী। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এ বছর ফের ফসল ফলানোয় মন দেন তারা। তার ফলও মিলেছে, উৎপাদন হয়েছে ব্যাপক। কিন্তু উৎপাদন ভালো হলেও ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না কৃষকরা। ফলে আবারও ক্ষতির মুখে পড়েছেন হাওরবাসী।
আজ রবিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হাওরবাসীর উন্নয়নে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা হাওর অ্যাডভোকেসি প্ল্যাটফরম (হ্যাপ) এ তথ্য জানায়।
সংস্থাটি আরও জানায়, গত বছর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে হাওরাঞ্চলের মানুষ তাদের উত্পাদিত ফসল ঘরে তুলতে পারেন নি। চলতি বছর বাঁধ নির্মাণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করায় সেখানে বিপুল পরিমাণ ধান উত্পাদন হয়েছে। কিন্তু সরকারিভাবে ধান না কেনায় কৃষকরা উত্পাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না।
লিখিত বক্তব্যে হ্যাপের যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুজ্জামান শরিফ বলেন, হাওর অঞ্চলে ৭টি জেলা রয়েছে। সেখানকার মানুষের জীবিকা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য নির্ভরশীল তাদের উত্পাদিত ধানের উপর। সরকার প্রতি মণ ধানের দাম এক হাজার ৪০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু কিছুদিন ধরে কৃষকরা প্রতি মণ ধান সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রায় ৩০০ টাকা কমে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে কৃষক শুধু ঠকছেই না বরং ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। এখানকার অধিকাংশ মানুষ গরিব হওয়ায় চাষাবাদের জন্য তাদের কোনো না কোনো সংস্থা থেকে ঋণ নিতে হয়। এ অবস্থায় সরকার নির্ধারিত মূল্য না পেলে কৃষকরা আরও বেশি ক্ষতিগ্রসত্ম হবেন।
সংবাদ সম্মেলনে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে আছে-সরকার নির্ধারিত মূল্যে কৃষকরা কিভাবে ধান বিক্রি করতে পারবে তার উপায় বের করা, ভাটির উঁচু-নিচু ক্ষেতগুলোকে সমতল করা, আগামী দুই মাসের জন্য প্রতিটি গ্রামে অস্থায়ী গোডাউন নির্মাণ করা এবং কৃষি কার্ডের ভিত্তিতে কৃষককে সমসত্ম সুবিধা দেয়া।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হ্যাপের যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুজ্জামান শরিফ, ঢাকাস্থ সুনামগঞ্জ সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক মেনন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আলাউদ্দিন, ঢাকাস্থ কিশোরগঞ্জ সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুল হক, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক চিত্তরঞ্জন প্রমুখ।