ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেসরকারি স্কুলে বাড়তি ফি আদায়

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানা অজুহাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি বহুল আলোচিত। কোনো কোনো প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের এমন বেপরোয়া আচরণে অভিভাবকরা বিস্মিত হন।

কর্তৃপক্ষ শতভাগ সেবার মনোভাব নিয়ে এ খাতে বিনিয়োগের কথা বললেও অনেক ক্ষেত্রেই কথা ও কাজে মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। মহামারির প্রেক্ষাপটে আর্থিক সংকটে পড়া অভিভাবকদের কাছ থেকে ফি কম নেওয়ার দৃষ্টান্ত একেবারেই কম। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সবাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দিলে অনেক শিক্ষার্থীর অপূরণীয় ক্ষতি হবে, যা বলাই বাহুল্য।

জানা গেছে, দেশের বেসরকারি হাইস্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে ইচ্ছামতো বিভিন্ন ফি আদায় করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ভর্তি না হলে নতুন বই দেওয়া হচ্ছে না- এমন অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে।

বিশেষ করে বকেয়া আদায়ের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সর্বশেষ জারি করা নীতিমালায় বেশকিছু খাতে ফি নিতে বারণ করা হয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠান এসব নির্দেশনা মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখাচ্ছে, যা দুঃখজনক। অতিরিক্ত ফি আদায়ে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে।

কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে শিক্ষার্থীদের মনে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে, তা সুখকর নয়। আমরা যদি শিক্ষার্থীদের কাছে বড় কিছু আশা করি, তাহলে চাতুর্য পরিহার করে তাদের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাথমিকের বিভিন্ন শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে যে পরিমাণ ফি আদায় করা হচ্ছে, তা পরিশোধ করা অনেক পরিবারের পক্ষেই সম্ভব নয়।

প্রশ্ন হল, বর্তমানে যেসব মানুষ ঋণগ্রস্ত, তারা সন্তানের ভর্তি বাবদ বাড়তি অর্থ জোগাড় করবেন কীভাবে? অর্থাভাবে কোনো শিক্ষার্থী যখন নিজ প্রতিষ্ঠান ছেড়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে বাধ্য হয়, তখন তার মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এই শিক্ষার্থীর সামনে যখন কোনো শিক্ষক নিজ পেশায় মহান আদর্শের কথা বলবেন; সেই বাণী তার মনে কী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে?

দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী শিক্ষক ও শিক্ষানুরাগী উদ্যোক্তার সংখ্যা কম নয়। তবে যারা শিক্ষাকে পণ্যে পরিণত করেছেন, তাদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

আমরা বিশ্বাস করতে চাই, আগামী দিনের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে একদিন এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অনেকে জ্ঞানের জগতে বড় ধরনের অবদান রাখবে, যার কারণে বিশ্ববাসী নতুন করে এ দেশের মানুষকে মর্যাদার আসনে বসাতে উš§ুখ হবে। যেসব প্রতিষ্ঠানে চাতুর্যকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়, সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উদারতার শিক্ষা পাবে কোথায়? নিয়ম অমান্যকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

বেসরকারি স্কুলে বাড়তি ফি আদায়

আপডেট টাইম : ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০২১

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানা অজুহাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি বহুল আলোচিত। কোনো কোনো প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের এমন বেপরোয়া আচরণে অভিভাবকরা বিস্মিত হন।

কর্তৃপক্ষ শতভাগ সেবার মনোভাব নিয়ে এ খাতে বিনিয়োগের কথা বললেও অনেক ক্ষেত্রেই কথা ও কাজে মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। মহামারির প্রেক্ষাপটে আর্থিক সংকটে পড়া অভিভাবকদের কাছ থেকে ফি কম নেওয়ার দৃষ্টান্ত একেবারেই কম। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সবাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দিলে অনেক শিক্ষার্থীর অপূরণীয় ক্ষতি হবে, যা বলাই বাহুল্য।

জানা গেছে, দেশের বেসরকারি হাইস্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে ইচ্ছামতো বিভিন্ন ফি আদায় করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ভর্তি না হলে নতুন বই দেওয়া হচ্ছে না- এমন অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে।

বিশেষ করে বকেয়া আদায়ের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সর্বশেষ জারি করা নীতিমালায় বেশকিছু খাতে ফি নিতে বারণ করা হয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠান এসব নির্দেশনা মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখাচ্ছে, যা দুঃখজনক। অতিরিক্ত ফি আদায়ে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে।

কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে শিক্ষার্থীদের মনে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে, তা সুখকর নয়। আমরা যদি শিক্ষার্থীদের কাছে বড় কিছু আশা করি, তাহলে চাতুর্য পরিহার করে তাদের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাথমিকের বিভিন্ন শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে যে পরিমাণ ফি আদায় করা হচ্ছে, তা পরিশোধ করা অনেক পরিবারের পক্ষেই সম্ভব নয়।

প্রশ্ন হল, বর্তমানে যেসব মানুষ ঋণগ্রস্ত, তারা সন্তানের ভর্তি বাবদ বাড়তি অর্থ জোগাড় করবেন কীভাবে? অর্থাভাবে কোনো শিক্ষার্থী যখন নিজ প্রতিষ্ঠান ছেড়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে বাধ্য হয়, তখন তার মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এই শিক্ষার্থীর সামনে যখন কোনো শিক্ষক নিজ পেশায় মহান আদর্শের কথা বলবেন; সেই বাণী তার মনে কী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে?

দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী শিক্ষক ও শিক্ষানুরাগী উদ্যোক্তার সংখ্যা কম নয়। তবে যারা শিক্ষাকে পণ্যে পরিণত করেছেন, তাদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

আমরা বিশ্বাস করতে চাই, আগামী দিনের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে একদিন এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অনেকে জ্ঞানের জগতে বড় ধরনের অবদান রাখবে, যার কারণে বিশ্ববাসী নতুন করে এ দেশের মানুষকে মর্যাদার আসনে বসাতে উš§ুখ হবে। যেসব প্রতিষ্ঠানে চাতুর্যকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়, সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উদারতার শিক্ষা পাবে কোথায়? নিয়ম অমান্যকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।