ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাল আমদানিতে শ্লথগতি, বাজারে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা জরুরি

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ চাল আমদানিতে শ্লথগতি বিরাজ করার বিষয়টি উদ্বেগজনক। মূলত বেসরকারি ও সরকারি-উভয় পর্যায়েই চাল আমদানিতে গতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এর ফলে অসাধু ব্যবসায়ী ও চালকল মালিকদের যে পোয়াবারো অবস্থা, তা সহজেই অনুমেয়। জানা গেছে, সরকারিভাবে ১১ লাখ টন চাল আমদানির লক্ষ্য থাকলেও আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৯৪ হাজার টন।

অন্যদিকে বেসরকারি খাতে সাড়ে ১৩ লাখ টনের বেশি চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত এসেছে ৩ লাখ ৮০ হাজার টন। অর্থাৎ সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ২৫ লাখ টন চাল আমদানির লক্ষ্য থাকলেও আমদানি হয়েছে মাত্র ৫ লাখ ৭৫ হাজার টন, যা দিয়ে চালের মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা কিছুতেই সম্ভব নয়। বাস্তবে হয়েছেও তাই। বলা চলে, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণের সরকারি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

চাল আমাদের প্রধান খাদ্যদ্রব্য। তাই চালের দর নিয়ে যাতে কোনোরকম অস্থিরতা দেখা না দেয়, এ ব্যাপারে সরকারের পূর্ণ সজাগ থাকা উচিত। সাধারণত বাজারে পণ্যমূল্য নির্ভর করে চাহিদা ও জোগানোর ওপর। জোগান কমে গেলে অথবা চাহিদা বৃদ্ধি পেলে পণ্যের দাম বাড়ে, যা চালসহ অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রযোজ্য। এ পরিস্থিতিতে সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্ত ও সময়োচিত পদক্ষেপ সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ দেখাতে পারে।

তবে চাল আমদানির বিষয়টিকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করা হয়েছে, এটাই প্রশ্ন। দেশে বোরো ও আমনের ফলন কম হওয়ায় গত বছরের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছিলেন। এজন্য সিদ্ধ চাল ও আতপ চালের আমদানি শুল্কও কমানো হয়েছে। তারপরও খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সেই সুযোগ গ্রহণ করতে কেন ব্যর্থ হলো, এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি।

সময়মতো প্রয়োজনীয় চাল আমদানি করা গেলে বর্তমানে এর বাজার পরিস্থিতি যে এমন রূপ ধারণ করত না, তা বলাই বাহুল্য। বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশেই মোটা চালের দাম সর্বাধিক। আর এর পেছনের কারণগুলো সরকারের অজানা নয়। সরকারের উচিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তা না হলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। অসাধু মিল মালিক ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য রোধের পাশাপাশি চালের দাম সহনশীল পর্যায়ে আনতে সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখবে, এটাই প্রত্যাশা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

চাল আমদানিতে শ্লথগতি, বাজারে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা জরুরি

আপডেট টাইম : ০৮:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ মার্চ ২০২১

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ চাল আমদানিতে শ্লথগতি বিরাজ করার বিষয়টি উদ্বেগজনক। মূলত বেসরকারি ও সরকারি-উভয় পর্যায়েই চাল আমদানিতে গতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এর ফলে অসাধু ব্যবসায়ী ও চালকল মালিকদের যে পোয়াবারো অবস্থা, তা সহজেই অনুমেয়। জানা গেছে, সরকারিভাবে ১১ লাখ টন চাল আমদানির লক্ষ্য থাকলেও আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৯৪ হাজার টন।

অন্যদিকে বেসরকারি খাতে সাড়ে ১৩ লাখ টনের বেশি চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত এসেছে ৩ লাখ ৮০ হাজার টন। অর্থাৎ সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ২৫ লাখ টন চাল আমদানির লক্ষ্য থাকলেও আমদানি হয়েছে মাত্র ৫ লাখ ৭৫ হাজার টন, যা দিয়ে চালের মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা কিছুতেই সম্ভব নয়। বাস্তবে হয়েছেও তাই। বলা চলে, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণের সরকারি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

চাল আমাদের প্রধান খাদ্যদ্রব্য। তাই চালের দর নিয়ে যাতে কোনোরকম অস্থিরতা দেখা না দেয়, এ ব্যাপারে সরকারের পূর্ণ সজাগ থাকা উচিত। সাধারণত বাজারে পণ্যমূল্য নির্ভর করে চাহিদা ও জোগানোর ওপর। জোগান কমে গেলে অথবা চাহিদা বৃদ্ধি পেলে পণ্যের দাম বাড়ে, যা চালসহ অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রযোজ্য। এ পরিস্থিতিতে সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্ত ও সময়োচিত পদক্ষেপ সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ দেখাতে পারে।

তবে চাল আমদানির বিষয়টিকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করা হয়েছে, এটাই প্রশ্ন। দেশে বোরো ও আমনের ফলন কম হওয়ায় গত বছরের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছিলেন। এজন্য সিদ্ধ চাল ও আতপ চালের আমদানি শুল্কও কমানো হয়েছে। তারপরও খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সেই সুযোগ গ্রহণ করতে কেন ব্যর্থ হলো, এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি।

সময়মতো প্রয়োজনীয় চাল আমদানি করা গেলে বর্তমানে এর বাজার পরিস্থিতি যে এমন রূপ ধারণ করত না, তা বলাই বাহুল্য। বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশেই মোটা চালের দাম সর্বাধিক। আর এর পেছনের কারণগুলো সরকারের অজানা নয়। সরকারের উচিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তা না হলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। অসাধু মিল মালিক ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য রোধের পাশাপাশি চালের দাম সহনশীল পর্যায়ে আনতে সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখবে, এটাই প্রত্যাশা।