ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবী তালিকা: নির্ভুল হওয়াই কাম্য

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ প্রথম ধাপে এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৩৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৯১ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর নামের তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতার নাম।

জানা গেছে, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ বুদ্ধিজীবীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা তাদের প্রাপ্য।

একাত্তরের গৌরবময় ইতিহাস এ দেশের মানুষকে বংশপরম্পরায় বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখা হলে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের নতুন নতুন তথ্য জানা যাবে। শহিদ বুদ্ধিজীবীদের সম্পর্কেও জানা যাবে অনেক তথ্য। প্রথমবারের

মতো শহিদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশের উদ্যোগের জন্য আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানাই।

মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়ের প্রাক্কালে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা পরাজয় নিশ্চিত জেনে মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে। প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তারা হত্যা করে জাতির অনেক কৃতী সন্তানকে। এ হত্যাযজ্ঞের একটি বড় উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতা লাভ করতে যাওয়া বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করে ফেলা। মুক্তিযুদ্ধের গোটা সময়টায় ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা শহরে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের হত্যা করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে যেসব বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছে, এবার তাদের সঠিক তালিকা তৈরির কাজ চলছে। আমরা আশা করব, দেশের সব শহিদ বুদ্ধিজীবীর নাম চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পাবে। বস্তুত কোনো ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কারণে নয়, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলেন।

কাজেই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ বুদ্ধিজীবীদের চূড়ান্ত যে তালিকা প্রকাশ করা হবে, তা যেন ত্রুটিমুক্ত হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা শহিদ হয়েছেন তাদের সবাইকে সম্মান জানানোর পদক্ষেপ নেওয়া হলে এটা হবে তাদের পরিবারের জন্য বড় সান্ত্বনা। একই সঙ্গে এ উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বিশ্বে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।

সরকার জাতির পক্ষ থেকে সম্মানস্বরূপ মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করায় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার আবির্ভাব ঘটেছে, যা অত্যন্ত ঘৃণিত বিষয়। সেক্ষেত্রে অমুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করার বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা যেন এ প্রক্রিয়ায় বাদ না পড়েন।

তেমনটি ঘটলে সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে যারা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, তাদের অবশ্যই ছেঁটে ফেলতে হবে তালিকা থেকে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবী তালিকা: নির্ভুল হওয়াই কাম্য

আপডেট টাইম : ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ মার্চ ২০২১

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ প্রথম ধাপে এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৩৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৯১ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর নামের তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতার নাম।

জানা গেছে, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ বুদ্ধিজীবীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা তাদের প্রাপ্য।

একাত্তরের গৌরবময় ইতিহাস এ দেশের মানুষকে বংশপরম্পরায় বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখা হলে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের নতুন নতুন তথ্য জানা যাবে। শহিদ বুদ্ধিজীবীদের সম্পর্কেও জানা যাবে অনেক তথ্য। প্রথমবারের

মতো শহিদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশের উদ্যোগের জন্য আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানাই।

মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়ের প্রাক্কালে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা পরাজয় নিশ্চিত জেনে মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে। প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তারা হত্যা করে জাতির অনেক কৃতী সন্তানকে। এ হত্যাযজ্ঞের একটি বড় উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতা লাভ করতে যাওয়া বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করে ফেলা। মুক্তিযুদ্ধের গোটা সময়টায় ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা শহরে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের হত্যা করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে যেসব বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছে, এবার তাদের সঠিক তালিকা তৈরির কাজ চলছে। আমরা আশা করব, দেশের সব শহিদ বুদ্ধিজীবীর নাম চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পাবে। বস্তুত কোনো ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কারণে নয়, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলেন।

কাজেই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ বুদ্ধিজীবীদের চূড়ান্ত যে তালিকা প্রকাশ করা হবে, তা যেন ত্রুটিমুক্ত হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা শহিদ হয়েছেন তাদের সবাইকে সম্মান জানানোর পদক্ষেপ নেওয়া হলে এটা হবে তাদের পরিবারের জন্য বড় সান্ত্বনা। একই সঙ্গে এ উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বিশ্বে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।

সরকার জাতির পক্ষ থেকে সম্মানস্বরূপ মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করায় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার আবির্ভাব ঘটেছে, যা অত্যন্ত ঘৃণিত বিষয়। সেক্ষেত্রে অমুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করার বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা যেন এ প্রক্রিয়ায় বাদ না পড়েন।

তেমনটি ঘটলে সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে যারা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, তাদের অবশ্যই ছেঁটে ফেলতে হবে তালিকা থেকে।