ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাসায়নিকের গুদামে বিস্ফোরণ: আবাসিক এলাকাকে ঝুঁকিমুক্ত করতে হবে

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বিভিন্ন সময়ে রাসায়নিকের গুদাম থেকে সৃষ্ট বা রাসায়নিকের গুদামের কাছাকাছি সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে হতাহতসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির প্রেক্ষাপটে সবাই আশা করেছিল, কোনো আবাসিক এলাকায় আর রাসায়নিকের গুদাম থাকবে না।

আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক বা বিস্ফোরকজাতীয় পদার্থ মজুদ ও বিপণন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করে বেশকিছু সুপারিশও করেছিল সরকারের গঠন করা তদন্ত কমিটি। এরপর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তদন্ত কমিটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে একের পর এক দুর্ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

রোববার কেরানীগঞ্জের একটি আবাসিক এলাকায় রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। কেরানীগঞ্জের কদমতলীর বন্দডাকপাড়া আবাসিক এলাকায় রাসায়নিকের গুদামে এ ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। ওই বিস্ফোরণের তীব্রতা এমনই ভয়াবহ ছিল যে এতে কয়েকটি বাড়ির টিনের চালা উড়ে গেছে।

বেশকিছু ভবনের দরজা-জানালার কাচ ভেঙে গেছে। বিস্ফোরণের পর একটি গোডাউনের মেঝেতে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

কেরানীগঞ্জের একটি প্লাস্টিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের এক মাস না যেতেই আরেকটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল। জানা গেছে, সেখানকার বন্দডাকপাড়া আবাসিক এলাকায় কয়েকটি গোডাউনে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক পদার্থ মজুদ করে রাখা হয়। গোডাউনগুলো সেমিপাকা, চারপাশে দেয়াল এবং উপরে টিনের চালা। গোডাউনের ভেতরে কোনো মানুষ ছিল না।

কেরানীগঞ্জের প্লাস্টিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর অবৈধ কারখানা ও গোডাউনের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশকিছু অবৈধ কারখানা সিলগালাও করে দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ঘটল উল্লিখিত বিস্ফোরণের ঘটনা।

প্রশ্ন হল, অবৈধ কারখানা ও গোডাউনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পরও আবাসিক এলাকার গোডাউনে রাসায়নিক পদার্থ মজুদ রাখা হয় কী করে? ওই এলাকায় এবং অন্যান্য আবাসিক এলাকায় এমন আরও কত গোডাউনে রাসায়নিক পদার্থ মজুদ রাখা হয়েছে, তা দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে।

একের পর এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরও আবাসিক এলাকাকে ঝুঁকিমুক্ত করার বিষয়ে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি লক্ষ করা যাচ্ছে না। মানুষকে এরকম ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করতে হবে আর কতদিন?

আমরা আশা করব, আবাসিক এলাকা থেকে অবিলম্বে সব দাহ্য পদার্থের গুদাম ও কারখানা সরিয়ে নেয়া হবে। এ ব্যাপারে আর যেন বিলম্ব না ঘটে সে জন্য সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে পদক্ষেপ নেয়া হবে, এটাই কাম্য। যে কোনো সময়ই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে, প্রতিটি ভবনে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

রাসায়নিকের গুদামে বিস্ফোরণ: আবাসিক এলাকাকে ঝুঁকিমুক্ত করতে হবে

আপডেট টাইম : ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বিভিন্ন সময়ে রাসায়নিকের গুদাম থেকে সৃষ্ট বা রাসায়নিকের গুদামের কাছাকাছি সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে হতাহতসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির প্রেক্ষাপটে সবাই আশা করেছিল, কোনো আবাসিক এলাকায় আর রাসায়নিকের গুদাম থাকবে না।

আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক বা বিস্ফোরকজাতীয় পদার্থ মজুদ ও বিপণন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করে বেশকিছু সুপারিশও করেছিল সরকারের গঠন করা তদন্ত কমিটি। এরপর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তদন্ত কমিটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে একের পর এক দুর্ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

রোববার কেরানীগঞ্জের একটি আবাসিক এলাকায় রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। কেরানীগঞ্জের কদমতলীর বন্দডাকপাড়া আবাসিক এলাকায় রাসায়নিকের গুদামে এ ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। ওই বিস্ফোরণের তীব্রতা এমনই ভয়াবহ ছিল যে এতে কয়েকটি বাড়ির টিনের চালা উড়ে গেছে।

বেশকিছু ভবনের দরজা-জানালার কাচ ভেঙে গেছে। বিস্ফোরণের পর একটি গোডাউনের মেঝেতে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

কেরানীগঞ্জের একটি প্লাস্টিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের এক মাস না যেতেই আরেকটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল। জানা গেছে, সেখানকার বন্দডাকপাড়া আবাসিক এলাকায় কয়েকটি গোডাউনে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক পদার্থ মজুদ করে রাখা হয়। গোডাউনগুলো সেমিপাকা, চারপাশে দেয়াল এবং উপরে টিনের চালা। গোডাউনের ভেতরে কোনো মানুষ ছিল না।

কেরানীগঞ্জের প্লাস্টিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর অবৈধ কারখানা ও গোডাউনের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশকিছু অবৈধ কারখানা সিলগালাও করে দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ঘটল উল্লিখিত বিস্ফোরণের ঘটনা।

প্রশ্ন হল, অবৈধ কারখানা ও গোডাউনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পরও আবাসিক এলাকার গোডাউনে রাসায়নিক পদার্থ মজুদ রাখা হয় কী করে? ওই এলাকায় এবং অন্যান্য আবাসিক এলাকায় এমন আরও কত গোডাউনে রাসায়নিক পদার্থ মজুদ রাখা হয়েছে, তা দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে।

একের পর এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরও আবাসিক এলাকাকে ঝুঁকিমুক্ত করার বিষয়ে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি লক্ষ করা যাচ্ছে না। মানুষকে এরকম ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করতে হবে আর কতদিন?

আমরা আশা করব, আবাসিক এলাকা থেকে অবিলম্বে সব দাহ্য পদার্থের গুদাম ও কারখানা সরিয়ে নেয়া হবে। এ ব্যাপারে আর যেন বিলম্ব না ঘটে সে জন্য সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে পদক্ষেপ নেয়া হবে, এটাই কাম্য। যে কোনো সময়ই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে, প্রতিটি ভবনে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন।