বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ কৌশলে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের বা সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাভবান হওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। সরল দৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে সব ঠিকই আছে। কিন্তু অনুসন্ধান করলেই প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসে।
সোমবার যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায় ১১শ’ কোটি টাকার প্রকল্পে অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। অভিযোগে বর্ণিত দুর্নীতি না হলে ডিপিডিসির কয়েকশ’ কোটি টাকা বেঁচে যেত। অভিযোগটি সত্য কি না তা তদন্তের বিষয়।
জানা গেছে, পণ্য ক্রয়ে দরপত্রের শর্তের কারণে কয়েকশ’ কোটি টাকা গচ্চার বিষয়ে ডিপিডিসির ব্যাখ্যা নিয়ে তদন্ত করতে পারে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। এর আগে ডিপিডিসির কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিল মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি ডিপিডিসি ব্যাখ্যাসহ মন্ত্রণালয়কে চিঠির যে জবাব দিয়েছে, তা সন্তোষজনক কি না তাও দেখার বিষয়।
আলোচিত প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ দরপত্রে রহস্যজনক শর্ত থাকার কথা উল্লেখ করে তা অনুসন্ধানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছে দরপত্রে অংশগ্রহণকারী দুটি কোম্পানি। উল্লেখ্য, এ প্রকল্পের অধীন নতুন ডিস্ট্রিবিউশন লাইনসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কেনার কথা রয়েছে।
দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী যেসব সরঞ্জাম বিদেশ থেকে আনার কথা, সেসবের অধিকাংশ দেশেও উৎপাদিত হয়। মূল্যের দিক থেকে বিবেচনা করলে দেশে তৈরি সরঞ্জাম কম দামে পাওয়া যায়। তবে সেসব সরঞ্জামের মানের বিষয়টি বিবেচনার দাবি রাখে।
সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্মত সরঞ্জাম দেশেও উৎপাদিত হয় কি না, এটাও বিবেচনার বিষয়। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম মানসম্মত না হলে যে কোনো সময় বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা থেকে যায়।
অভিযোগ রয়েছে- আলোচিত কাজের দরপত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু কঠিন শর্ত দেয়া হয়েছে, যাতে সেসব শর্ত দেশীয় কোম্পানিগুলো পূরণ করতে না পারে। অভিযোগটি যাচাই করে দেখা দরকার। আরও অভিযোগ উঠেছে, দরপত্র মূল্যায়নে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এ অভিযোগটিও যাচাই করে দেখা দরকার।
বিষয়টি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে তদন্ত করলেই প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে। এ ছাড়া এ বিষয়ে আরও যেসব অভিযোগ উঠেছে সেসবও যাচাই করে দেখা দরকার। অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সরবরাহ কিংবা এ ধরনের যে কোনো সংবেদনশীল প্রকল্পের কাজ কী ধরনের কোম্পানি পাবে, এ নিয়ে আলোচনার চেয়ে কাজটি মানসম্মত ও ঝুঁকিমুক্তভাবে সম্পন্ন হচ্ছে কি না, তাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত।