বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ প্রতিদিনই দেশের কোনো-না-কোনো স্থানে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। সোমবার পানিবাহী লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে চিরবিদায় নিয়েছে রাজধানীর ওয়ারী উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী আবির হোসেন।
বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা ও বাৎসরিক মিলাদ মাহফিলে যোগ দিতে যাওয়ার সময় আবির দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ ঘটনার পরপর তার পরিবারে ও বিদ্যালয়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।
জানা যায়, সড়কের একপাশ দিয়ে যাচ্ছিল আবির। এমন সময় বেপরোয়া গতির একটি লরি তাকে ধাক্কা দেয়। পরে হাসপাতালে নেয়া হলেও আবিরকে বাঁচানো যায়নি।
কয়েক মাস আগে আবিরের মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এ ছাড়া তার এক ভাই কয়েক বছর আগে পানিতে ডুবে মারা গেছেন। এবার আবিরকেও হারালো তার পরিবার।
এ অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, এ তরুণের মৃত্যুশোক কী করে সহ্য করবে তার পরিবার? আবিরের সহপাঠীরা জানিয়েছে, পানিবাহী লরিটি বেপরোয়া গতিতে চলছিল। বেপরোয়া গতির কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রশ্ন হল, আর কত দুর্ঘটনার পর গাড়ির চালকরা সচেতন হবেন? একের পর এক দুর্ঘটনার খবর জানার পরও গাড়ির চালকদের বেপরোয়া মনোভাবে কেন পরিবর্তন আসছে না, তা খতিয়ে দেখা জরুরি।
রোববার রাত থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় আরও ৯ জনের মৃত্যুর খবরটিও গতকালের যুগান্তরে প্রকাশিত হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা এমন রূপ নিয়েছে যে, দেশে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক মানুষ হতাহত হচ্ছে এবং বিপুল পরিমাণ সম্পদ নষ্ট হচ্ছে।
বিপুলসংখ্যক ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন সড়কে চলাচল করছে এবং অনেক অদক্ষ চালক যানবাহন চালাতে গিয়ে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। এসব খবর নতুন নয়। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন এবং অদক্ষ চালকদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান অব্যাহত না থাকলে মানুষ হতাহত হওয়া এবং সম্পদ নষ্ট হওয়ার পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। বস্তুত পরিবহন সেক্টরের মূল সমস্যাগুলো চিহ্নিত।
এ পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে সার্বিক অবস্থার কতটা উন্নতি হবে, তা অনেকটাই নির্ভর করছে সমস্যাগুলোর সমাধানে কর্তৃপক্ষ কতটা আন্তরিক তার ওপর। পরিবহন সেক্টরকে দুর্নীতিমুক্ত করার পদক্ষেপ নিতে হবে।
সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টি আর দশটি সমস্যা থেকে যে একেবারেই আলাদা, তা কর্তৃপক্ষকে বুঝতে হবে। এ সমস্যাকে আর দশটি সমস্যার মতো বিবেচনা করা হলে সড়ক দুর্ঘটনা যে কাক্সিক্ষত মাত্রায় কমবে না তা বলাই বাহুল্য।