বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ কে হবেন পটুয়াখালী-১ (মির্জাগঞ্জ-দুমকি-সদর) আসনের পরবর্তী এমপি? স্থানীয় সরকার সচিব আব্দুল মালেক সময় পেলেই এলাকায় যাচ্ছেন। এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করেছেন। তিনি নিজ উপজেলা বাউফল অথবা সদর আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। এমনটাই মনে করছে বিভিন্ন মহল।
পটুয়াখালী আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একমাত্র আব্দুল মালেক প্রার্থী হলেই দলের মধ্যে কোনো কোন্দল বা বিশৃঙ্খলা থাকবে না। সবাই তাকে গ্রহণ করবে। যদিও সাবেক ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শাহজাহান মিয়া, আওয়ামী লীগের তথ্য গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেনেরও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ বলে শোনা যায়। তবে শাহজাহান মিয়ার বয়স হয়েছে। বয়স্কজনিত নানা রোগে-শোকে কাবু হয়ে পড়েছেন। আগের মতো তিনি দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় নন। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব আব্দুল মালিককে প্রার্থী করলে শাহজাহান মিয়া ও তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরাও হাসিমুখে মেনে নেবেন। কারণ পটুয়াখালী সদরসহ অন্যান্য উপজেলার অবকাঠামোগত উন্নয়নে আব্দুল মালেকের ব্যাপক অবদান রয়েছে।
অন্যদিকে আফজাল হোসেন কেন্দ্রীয় রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হওয়ার পর তার ব্যস্ততা আরও বেড়ে গেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসীন হলের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল মালেককে বাউফল (পটুয়াখালী-২) আসন থেকে প্রার্থী চান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। সদর বা বাউফল যেখান থেকেই হোক সেখান থেকেই জয় সহজ হবে বলে মনে করেন তারা। বাউফল উপজেলা স্থানীয় বাসিন্দা নুরুজ্জামান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এলাকার রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভাট, মসজিদ-মন্দিরের অবকাঠামোগত উন্নয়নে আব্দুল মালেকের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। তার কাছে কোনো কাজের জন্য গেলে খালি হাতে ফিরতে হয় না। আমরা লোককেই আমরা আগামীতে এমপি হিসেবে চাই।’
স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিও একাদলে ভাগ হয়ে গেছে। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আব্দুল মালেক আওয়ামী লীগের প্রার্থী ধরে নিয়েই বিএনপি তাদের ঘুঁটি সাজাচ্ছে। সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে ঘিরে একটি বলয়। তার বিরোধী সাবেক পৌর মেয়র মোস্তাক আহমেদ পিনু, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্নেহাংশু সরকার কুট্টি (কুট্টি সরকার), জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ। তারা আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে ঠেকিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে শোনা গেছে।
এদিকে বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হওলাদার। তিনিও আবার এই আসনে লাঙ্গলের প্রার্থী হতে আগ্রহী বলে শোনা গেছে। তবে সাংগঠনিকভাবে এই আসনে জাতীয় পার্টি দুর্বল। রুহুল আমিন হাওলাদারের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিও অতটা ভালো না। গত নির্বাচনে তিনি মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন। যে কারণে নির্বাচনী এলাকায় কোনো ধরনের তৎপরতা ছাড়াই জয়ী হয়েছেন। এলাকার উন্নয়নেও তার কোনো ভূমিকা নেই। জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতাকর্মীরাই বলছেন, এই ভাবমূর্তি নিয়ে আগামী নির্বাচনের বৈতরণী পার হওয়া রুহুল আমিন হাওলাদারের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।
চাকরি থেকে অবসরে গিয়ে আব্দুল মালেককে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন প্রয়োজন হবে। বর্তমান আরপিওতে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে বেশকিছু জটিলতা রয়েছে। বর্তমান আইন অনুযায়ী সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেয়ার তিন বছর পর নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ আছে। তবে এই শর্ত শিথিল হয়ে যাবে, সরকারের বিভিন্ন মহলে এমনটাই আলোচনা আছে। আরপিও সংশোধন হলে আব্দুল মালেকের জন্য আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রাথী হওয়া সহজ হবে।