পীর হাবিবুর রহমান ।।
সাংবাদিকতার কিংবদন্তি এবিএম মূসা আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু আমাদের স্মৃতিপটে, মননে, মেধায় ও চেতনায় তিনি চিরভাস্মর। এ দেশে সাংবাদিকতার ইতিহাসে যেসব পথিকৃতের নাম সোনার হরফে লেখা আছে, মানুষের হৃদয়ে গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মানে গ্রোথিত এবিএম মূসা তাদেরই একজন। নিজেই একজন ব্যক্তিত্বে, পেশাদারিত্বে, মেধায়, যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছিলেন। তিনি মানুষের পক্ষে বলতেন- মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নের আপোসহীন ছিলেন, বঙ্গবন্ধুর বিশাল হৃদয়ের উষ্ণ সান্নিধ্য পেয়েছিলেন। পেয়েছিলেন স্নেহ। পরবর্তী সকল রাষ্ট্রনায়কই তাকে সম্মান ও সমীহ করতেন। সাংবাদিকদের বিপদ-আপদ থেকে যেমন বুক দিয়ে আগলে রাখতেন, তেমনি যেকোনো শাসকের অন্যায় অত্যাচার, ভুলভ্রান্তি নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে কথা বলতেন। সমালোচনায় ক্ষত-বিক্ষত করতেন, প্রতিবাদ করতেন।
এমন আত্নমর্যাদাসম্পন্ন জাঁদরেল সাংবাদিক ও স্নেহময় পিতৃতুল্য অভিভাবক আমাদের জীবনে আর আসবেন না। তিনি যতদিন বেঁচে ছিলেন, মনে হয়েছে কোনো ক্ষমতাবানদের রোষানলে পড়লে বিদপগ্রস্ত হলে কেউ পাশে না দাঁড়াবেন, এবিএম মূসা দাঁড়াবেন।
তিনি আমাদের সবার প্রিয় মূসা ভাই ছিলেন। পিতার মূসা ভাই, সন্তানেরও মূসা ভাই। আসলে সবার ভালোবাসার, শ্রদ্ধার আসনে বসেছিলেন, এখনো আছেন প্রিয় মূসা ভাই।
আমার সঙ্গে সম্পর্ক কতটা নিবিড় ছিল, কাজের ভেতর-কাজের বাইরে সেটি কিছুটা হলেও তার মৃত্যুর পর লিখেছি। মূসা ভাই আমার পীর ছিলেন। আমি তার মুরিদ ছিলাম মাত্র। মৃত্যুর আগে আমার অর্ধেক জীবন নিয়ে প্রকাশিত স্মারকগ্রন্থে তিনিও স্নেহদান করে গেছেন লেখার মধ্য দিয়ে। তার স্নেহ, সান্নিধ্য পাওয়া অগ্রজ, অনুজ ও তার বন্ধুদের লেখা নিয়ে অধ্যাপক এমিরেটাস আনিসুজ্জামানের সম্পাদনায় এবিএম মূসা স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করেছে মওলা ব্রাদার্স। অসংখ্য গুণীজনের মধ্যে আমার লেখাটিও ঠাঁই পেয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এর প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। স্মারকগ্রন্থ প্রকাশনা সম্পাদকমণ্ডলীর মধ্যে রয়েছেন- সাখাওয়াত আলী খান, সৈয়দ আবুল মকসুদ, মাহফুজ উল্লাহ, মতিউর রহমান চৌধুরী, শামসুদ্দীন পেয়ারা, হাসান হাফিজ, সেতারা মূসা এবং মরিয়ম সুলতানা মূসা।
স্মারকগ্রন্থে ১০০ জন লিখেছেন। নামের অধ্যাক্ষর অনুযায়ী তারা হলেন- অজয় দাশগুপ্ত, আতাউস সামাদ, ব্যারিস্টার আফতাব উদ্দিন তপন, আবদুর রহিম, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আবদুল গাফফার চৌধুরী, আমানউল্লা্হ, আলী হাবিব, আশরাফ কায়সার, আসাদ চৌধুরী, আসিফ নজরুল, এবিএম রফিকুর রহমান, এম সাখাওয়াত হোসেন, এরশাদ মজুমদার, ইউসুফ শরীফ, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, কাজল ঘোষ, কাজী রওনাক চৌধুরী, কামাল লোহানী, ড. কামাল হোসেন, কে জি মুস্তফা, কেজি মোস্তফা, গোলাম তাহাবুর, গোলাম মোর্তোজা, গোলাম সারওয়ার, ছন্দা দাস, জগলুল আহমেদ চৌধুরী, তৌহিদুর রহমান, দুলাল মাহমুদ, ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, নাঈমুল ইসলাম খান, নিনি ওয়াহেদ, নির্মল চক্রবর্তী, নূরুজ্জামান সুমন, নূরে আলম সিদ্দিকী, পারভীন সুলতানা মূসা ঝুমা, পীর হাবিবুর রহমান, ফ.র মাহমুদ হাসান, ফরিদ হোসেন, ফরিদুর রেজা সাগর, ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী, মইনুল হোসেন, মতিউর রহমান চৌধুরী, মনজুর আহমদ, মনজুরুল আহসান বুলবুল, মনির হায়দার, মনোজ রায়, মরিয়ম সুলতানা মূসা, মাহফুজ উল্লাহ, মাহবুবুল আলম, মাহমুদ হাফিজ, মাহমুদুর রহমান মান্না, মিজানুর রহমান খান, ড. মিজানুর রহমান শেলী, মো. চাঁন মিয়া, মো. জাকারিয়া পিন্টু, মো. লুৎফর রহমান বীনু, মোয়াজ্জেম হোসেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস, মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, রফিকুল ইসলাম রতন, রাশেদা কে চৌধুরী, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, রুহুল আমিন, রেহানা সালাম, রোবায়েত ফেরদৌস, শওকত মাহমুদ, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, শফিক রেহমান, শান্তা মারিয়া, শামসুদ্দিন পেয়ারা, শামসুল হুদা, শামীমা চৌধুরী, ড. শারমিন মূসা, শাহজাহান মিয়া, শাহজাহান সরদার, সাইফুল আলম, সাখাওয়াত আলী খান, সাজেদুল হক, সাদেক হোসেন খোকা, সাযযাদ কাদির, সিরাজুর রহমান, সেতারা মূসা, সেলিম আজাদ চৌধুরী, সোহরাব হাসান, সৈয়দ আবুল মকসুদ, সৈয়দ কামালউদ্দিন, সৈয়দ বদরুল আহসান, স্বপন সাহা, হাসান হাফিজ, হায়দার আকবর খান রনো। এছাড়া ইংরেজিতে মূসা ভাইকে নিয়ে স্মারকগ্রন্থে লিখেছেন-অনন্ত ইউসুফ, মুস্তফা কামাল মজুমদার, রুবায়েত নিজাম, তাসমিয়াহ চৌধুরী হৃদি, টিউলিপ চৌধুরী এবং ওয়ামিহ চৌধুরী সিঁথি।
এবিএম মূসার রচনাসামগ্রী থেকে অনেক তথ্য উঠিয়ে আনা হয়েছে, ঠাঁই পেয়েছে অনেক দুর্লভ ছবি। আমরা ধারাবাহিকভাবে সকল লেখকের এই কীর্তিমান ও বরেণ্য সাংবাদিক সম্পর্কে মূল্যায়নের চুম্বক অংশ প্রকাশ করবো। প্রধান সম্পাদক: পূর্বপশ্চিমবিডি. নিউজ