সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘আমেরিকার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) একটা নিয়ম- ঘটে গেলে পরে ঠিক। আর ঘটার আগে বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করে মূলত তাদের দেশের স্বার্থ হাসিলের জন্য। তারা অনেক কিছুই চায়। ভাবলো ইলেকশনের আগে যদি চাপ-টাপ দিয়ে সেগুলো পাওয়া যায়।’
আজ বৃহস্পতিবার সিলেটে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমেরিকা ডকট্রিন অব রিয়্যালিটিতে বিশ্বাসী। বাস্তব হয়ে গেলে তখন তারা কোনো ঝামেলা করে না। ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকার সরকার আমাদের বিরোধী ছিল। ১৬ ডিসেম্বর যখন আমরা যুদ্ধে জয়লাভ করলাম, আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরি করলাম। এরপর যখন ১৬টি প্রস্তাব আসে ১৫টিই বাংলাদেশকে সাপোর্ট করে। কারণ, বাংলাদেশ হয়েই গেছে, তখন তারা সাপোর্ট করেছে।’
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর ভারত এবং আমেরিকা আমাদের সবচেয়ে বড় সহযোগী ছিল। তারা আমাদের সাহায্য-সহযোগিতা করেছে। আমেরিকা ১ নম্বর আমাদের রপ্তানি ও বিনিয়োগকারী দেশ। তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে বলে আমি আশাবাদী।’
মন্ত্রিত্ব নিয়ে সিলেটবাসী নতুন করে কোনো সুখবর পেতে পারে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সেটা কোনোভাবেই বলা যাবে না। আমরা যেটা পেয়েছি, তাতেই আমি সন্তুষ্ট। কারণ, গত পাঁচ বছর প্রধানমন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে আমাকে ফ্রি হ্যান্ড করে দিয়েছিলেন। ফলে আমি অত্যন্ত নিষ্ঠা-আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছি। দেশের মান-ইজ্জত, আমাদের অবস্থান অনেক উঁচুতে নিয়ে গেছি। আমরা কারও লেজুড় না- সেইটা প্রমাণ করেছি।’
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আর সাধারণের ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করেছি- দেশে একটা আদর্শ নির্বাচন করে। মোটামুটিভাবে আমি অনেক আনন্দিত, মন্ত্রণালয়ে অনেকগুলো কাজ করেছি। আগামীতেও এই কাজগুলো অনেকেই করবে। আমি তিনটা প্যাকেজ দিয়েছিলাম। একটার নাম ‘‘ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি’’, আরেকটার নাম ‘‘পাবলিক ডিপ্লোমেসি’’ আর আরেকটা ‘‘রিজওনাল পিস অ্যান্ড স্ট্যাবিলিটি’’। আমাদের এই অঞ্চলে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা দরকার। আমি আনন্দিত যে আমার প্রতিবেশী রাষ্ট্র এগুলো গ্রহণ করেছে।’
গত মেয়াদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিজের মূল্যায়ন কীভাবে করবেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি তো মনে করব, খুব সাফল্যজনক। এই পাঁচ বছরের দেশের অবস্থান বিশ্বের মধ্যে যথেষ্ট উন্নত অবস্থানে গেছে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে সব সময় সাহস জুগিয়েছেন, উৎসাহ দিয়েছেন। তার ফলে আমি এই কাজগুলো করতে পেরেছি।’
এ সময় ড. মোমেনের সঙ্গে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদসহ দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।