ঢাকা , শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিনামূল্যে বিতরণের ১০ হাজার বই জব্দ, আটক ২

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বিতরণের ১০ হাজার বই জব্দ করার কথা জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এ সময় বিনামূল্যে বিতরণের বই খোলাবাজারে বিক্রি ও মজুতদারির অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাজধানীর সূত্রাপুরের বাংলাবাজার ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গোডাউনে অভিযান চালিয়ে দুই ট্রাক বইসহ তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন-সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল (৫৫) ও মো. দেলোয়ার হোসেন (৫৬)।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি-দক্ষিণ) যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

ডিএমপি জানায়, কতিপয় অসাধু চক্র শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের বই মজুতদারির মাধ্যমে খোলাবাজারে বিক্রি করছে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাবাজার এলাকায় এই অভিযান চালায় ডিবির লালবাগ বিভাগের কোতয়ালী জোনাল টিম। অভিযানে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের প্রায় ১০ হাজার বই জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে ডিবি সূত্রে আরও জানা যায়, আটককৃতরাসহ অন্যান্য অবৈধ মজুতদারিরা বছরের শুরুতে নতুন পাঠ্যপুস্তক বিতরণে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করা এবং অবৈধ উপায়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশে এসব বই মজুত করে বিক্রয় করে আসছিল।

এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

উল্লেখ্য, প্রতিবছরের মতো এবারও বছরের প্রথম দিনে সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই পৌঁছানোর কথা থাকলেও তা হয়নি। অন্যবারের মতো শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে এবার আর ‘বই উৎসব’ও হয়নি। সব শিক্ষার্থীও সব বই পায়নি। যারা পেয়েছে তারাও বছরের প্রথম দিনে সর্বোচ্চ তিনটি বই পেয়েছে। কারণ, ৪০ কোটির বেশি বই দরকার হলেও বছরের শেষ দিন পর্যন্ত ছাপা হয়েছিল মাত্র সাড়ে ৬ কোটি বই। সব উপজেলায় বই পাঠানোও হয়নি।

সর্বশেষ গত ৯ জানুয়ারী (বৃহস্পতিবার) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছিলেন, আগামী মাস অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই পৌঁছে যাবে। ওইদিন ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং ক্ষমতার পটপরিবর্তনের কারণে পাঠ্যবই ছাপানোর দরপত্র, পুনঃ দরপত্র প্রক্রিয়ায় এবার অনেক দেরি হয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল, বইয়ে সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জন হয়েছে। এতে দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে অক্টোবরে। কয়েকটি বইয়ের দরপত্র প্রক্রিয়া এখনো চলছে। অন্যান্য বছর দরপত্র প্রক্রিয়া জুনে শেষ হয়েছিল। এ ছাড়া এবার মানসম্মত কাগজ ও কালির ব্যাপক সংকট ছিল। সব মিলিয়ে সময়মতো বই ছাপানো শুরু করা যায়নি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

বিনামূল্যে বিতরণের ১০ হাজার বই জব্দ, আটক ২

আপডেট টাইম : ৯ ঘন্টা আগে

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বিতরণের ১০ হাজার বই জব্দ করার কথা জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এ সময় বিনামূল্যে বিতরণের বই খোলাবাজারে বিক্রি ও মজুতদারির অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাজধানীর সূত্রাপুরের বাংলাবাজার ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গোডাউনে অভিযান চালিয়ে দুই ট্রাক বইসহ তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন-সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল (৫৫) ও মো. দেলোয়ার হোসেন (৫৬)।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি-দক্ষিণ) যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

ডিএমপি জানায়, কতিপয় অসাধু চক্র শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের বই মজুতদারির মাধ্যমে খোলাবাজারে বিক্রি করছে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাবাজার এলাকায় এই অভিযান চালায় ডিবির লালবাগ বিভাগের কোতয়ালী জোনাল টিম। অভিযানে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের প্রায় ১০ হাজার বই জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে ডিবি সূত্রে আরও জানা যায়, আটককৃতরাসহ অন্যান্য অবৈধ মজুতদারিরা বছরের শুরুতে নতুন পাঠ্যপুস্তক বিতরণে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করা এবং অবৈধ উপায়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশে এসব বই মজুত করে বিক্রয় করে আসছিল।

এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

উল্লেখ্য, প্রতিবছরের মতো এবারও বছরের প্রথম দিনে সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই পৌঁছানোর কথা থাকলেও তা হয়নি। অন্যবারের মতো শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে এবার আর ‘বই উৎসব’ও হয়নি। সব শিক্ষার্থীও সব বই পায়নি। যারা পেয়েছে তারাও বছরের প্রথম দিনে সর্বোচ্চ তিনটি বই পেয়েছে। কারণ, ৪০ কোটির বেশি বই দরকার হলেও বছরের শেষ দিন পর্যন্ত ছাপা হয়েছিল মাত্র সাড়ে ৬ কোটি বই। সব উপজেলায় বই পাঠানোও হয়নি।

সর্বশেষ গত ৯ জানুয়ারী (বৃহস্পতিবার) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছিলেন, আগামী মাস অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই পৌঁছে যাবে। ওইদিন ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং ক্ষমতার পটপরিবর্তনের কারণে পাঠ্যবই ছাপানোর দরপত্র, পুনঃ দরপত্র প্রক্রিয়ায় এবার অনেক দেরি হয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল, বইয়ে সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জন হয়েছে। এতে দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে অক্টোবরে। কয়েকটি বইয়ের দরপত্র প্রক্রিয়া এখনো চলছে। অন্যান্য বছর দরপত্র প্রক্রিয়া জুনে শেষ হয়েছিল। এ ছাড়া এবার মানসম্মত কাগজ ও কালির ব্যাপক সংকট ছিল। সব মিলিয়ে সময়মতো বই ছাপানো শুরু করা যায়নি।