ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জনবল সংকটে নিষ্ক্রিয় জলযান

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নানা সমস্যার মধ্যে একটি হচ্ছে, এ সংস্থার ১২৭টি জলযান অলস পড়ে থাকা।

এসব যানবাহন ক্রয়ে ব্যয় হয়েছিল ২ হাজার ২১ কোটি টাকা, অথচ এগুলোকে কোনো কাজেই লাগানো যাচ্ছে না। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে জনবল সংকটের কথা।

শিপইয়ার্ড ও নদীতে পড়ে থাকা ২৪টি ড্রেজারসহ ১২৭টি জলযানের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। যথাযথ পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জলযানগুলোর আয়ুষ্কালও ক্রমশ কমে যাচ্ছে।

জানা গেছে, জলযানগুলো পরিচালনার জন্য তিন বছর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ১ হাজার ৯১৯টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করেছিল বিআইডব্লিউটিএ। এর মধ্য থেকে ৩১৮টি পদ কমিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৬০১টি পদ সৃষ্টির অনুমোদন দিলেও তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও নানা ধরনের প্রশাসনিক জটিলতার কারণে অর্থ মন্ত্রণালয় এসব পদের অনুমোদন দেয়নি। তিন বছর আগের একটি প্রস্তাবের কেন এখনও সুরাহা হল না, তা এক প্রশ্ন বটে। জানা গেছে, এ পর্যন্ত কয়েক দফায় অর্থ মন্ত্রণালয় নৌ মন্ত্রণালয়ের কাছে তথ্য চেয়েছে। নৌ মন্ত্রণালয় পাঁচ দফায় বিভিন্ন তথ্য সরবরাহও করেছে। তবু কেন ফাইল আটকে আছে তা বোধগম্য নয়।

শুধু জনবল সংকটের কারণে এতগুলো জলযান অলস পড়ে থাকবে তা মেনে নেয়া যায় না। জনবল সংকটের কারণে ড্রেজারগুলো সার্বক্ষণিকভাবে সচল হতে না পারায় যে হারে নদী ড্রেজিং করার কথা, তার এক-চতুর্থাংশও হচ্ছে না। ড্রেজারগুলো দিয়ে প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা ড্রেজিং করার কথা; কিন্তু বাস্তবে হচ্ছে মাত্র ৫-৬ ঘণ্টা। এ অবস্থায় ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথে নাব্য ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।

সবচেয়ে বড় যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তা হল, জলযানগুলো বেশিদিন ফেলে রাখা হলে সেগুলোর আয়ুষ্কাল এক সময় শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে। আমরা তাই জোর দিয়ে বলতে চাই, জনবল সংকটের বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অনতিবিলম্বে তার নিষ্পত্তি করা দরকার।

জনবল অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রতা প্রসঙ্গে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বলেছেন, জনবল নিয়োগের প্রস্তাবের ব্যাপারে কিছু তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি, তথ্য পাওয়ার পর প্রস্তাব পর্যালোচনা করে অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। যদি তা-ই হয়, তাহলে নৌ মন্ত্রণালয়ের উচিত হবে তথ্যগুলো দ্রুতই অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা। ২ হাজার কোটিরও বেশি টাকায় কেনা জলযানগুলো নিষ্ক্রিয় অবস্থায় ফেলে রাখা মোটেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় বহন করে না।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনবল সংকটে নিষ্ক্রিয় জলযান

আপডেট টাইম : ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নানা সমস্যার মধ্যে একটি হচ্ছে, এ সংস্থার ১২৭টি জলযান অলস পড়ে থাকা।

এসব যানবাহন ক্রয়ে ব্যয় হয়েছিল ২ হাজার ২১ কোটি টাকা, অথচ এগুলোকে কোনো কাজেই লাগানো যাচ্ছে না। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে জনবল সংকটের কথা।

শিপইয়ার্ড ও নদীতে পড়ে থাকা ২৪টি ড্রেজারসহ ১২৭টি জলযানের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। যথাযথ পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জলযানগুলোর আয়ুষ্কালও ক্রমশ কমে যাচ্ছে।

জানা গেছে, জলযানগুলো পরিচালনার জন্য তিন বছর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ১ হাজার ৯১৯টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করেছিল বিআইডব্লিউটিএ। এর মধ্য থেকে ৩১৮টি পদ কমিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৬০১টি পদ সৃষ্টির অনুমোদন দিলেও তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও নানা ধরনের প্রশাসনিক জটিলতার কারণে অর্থ মন্ত্রণালয় এসব পদের অনুমোদন দেয়নি। তিন বছর আগের একটি প্রস্তাবের কেন এখনও সুরাহা হল না, তা এক প্রশ্ন বটে। জানা গেছে, এ পর্যন্ত কয়েক দফায় অর্থ মন্ত্রণালয় নৌ মন্ত্রণালয়ের কাছে তথ্য চেয়েছে। নৌ মন্ত্রণালয় পাঁচ দফায় বিভিন্ন তথ্য সরবরাহও করেছে। তবু কেন ফাইল আটকে আছে তা বোধগম্য নয়।

শুধু জনবল সংকটের কারণে এতগুলো জলযান অলস পড়ে থাকবে তা মেনে নেয়া যায় না। জনবল সংকটের কারণে ড্রেজারগুলো সার্বক্ষণিকভাবে সচল হতে না পারায় যে হারে নদী ড্রেজিং করার কথা, তার এক-চতুর্থাংশও হচ্ছে না। ড্রেজারগুলো দিয়ে প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা ড্রেজিং করার কথা; কিন্তু বাস্তবে হচ্ছে মাত্র ৫-৬ ঘণ্টা। এ অবস্থায় ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথে নাব্য ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।

সবচেয়ে বড় যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তা হল, জলযানগুলো বেশিদিন ফেলে রাখা হলে সেগুলোর আয়ুষ্কাল এক সময় শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে। আমরা তাই জোর দিয়ে বলতে চাই, জনবল সংকটের বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অনতিবিলম্বে তার নিষ্পত্তি করা দরকার।

জনবল অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রতা প্রসঙ্গে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বলেছেন, জনবল নিয়োগের প্রস্তাবের ব্যাপারে কিছু তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি, তথ্য পাওয়ার পর প্রস্তাব পর্যালোচনা করে অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। যদি তা-ই হয়, তাহলে নৌ মন্ত্রণালয়ের উচিত হবে তথ্যগুলো দ্রুতই অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা। ২ হাজার কোটিরও বেশি টাকায় কেনা জলযানগুলো নিষ্ক্রিয় অবস্থায় ফেলে রাখা মোটেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় বহন করে না।