ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিস্তা সেচ প্রকল্প সম্প্রসারণ: বৃষ্টির পানি ধরে রাখার বড় উদ্যোগ নিতে হবে

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বিভিন্ন প্রকল্প প্রস্তাবে অতিরিক্ত অর্থ প্রাক্কলন ও উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিদেশ ভ্রমণকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞতার জন্য বিদেশ ভ্রমণকে প্রকল্প প্রস্তাবে এমনভাবে যুক্ত করা হয় যেন এ ধরনের ভ্রমণ অনিবার্য। এমন উচ্চাভিলাষী প্রস্তাব প্রায়ই প্রশ্নের মুখে পড়ে। গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ১০ প্রশ্নের মুখে পড়েছে ‘তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার সম্প্রসারণ’ প্রকল্প।

এক্ষেত্রে বিভিন্ন খাতে ব্যয় প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের উদ্দেশ্যও যথাযথ হয়নি বলে মনে করছে পরিকল্পনা কমিশন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) এক সভায় বিদেশ ভ্রমণসহ পাঁচ খাতে ব্যয় বাদ দেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে। জানা গেছে, ‘তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।

যথাযথ প্রক্রিয়ার পর একনেক বৈঠকে অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। আশা করা হচ্ছে, প্রকল্পের আওতায় এক লাখ হেক্টর জমিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেচের পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এতে খাদ্যশস্যের যে পরিমাণ উৎপাদন বাড়বে তার বাজারমূল্য কম নয়। প্রস্তাবিত প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত বেশ কিছু ব্যয়বহুল প্রস্তাবসহ জলযান কেনার প্রস্তাব বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া বেশকিছু খাতে ব্যয় কমানোর সুপারিশও করা হয়েছে। প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত সামাজিক বনায়নের বিষয়টি বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে। তবে বৃক্ষরোপণের পর তা সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলবে না, যা বলাই বাহুল্য। উল্লিখিত প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে খাদ্যশস্যের ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

এমন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে তিস্তার ওপর নির্মিত বাঁধের (ব্যারাজ) ভাটি অঞ্চলের নদী-তীরবর্তী এলাকার মানুষ কতটা উপকৃত হবে, এমন প্রশ্নও দেখা দেবে। দেশের অনেক নদীতে শুষ্ক মৌসুমে ধান চাষ করার খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে আসে। অথচ এসব নদ-নদী-খাল-জলাশয় খনন করে বর্ষার পানি ধরে রাখার বিষয়টি বহুদিন ধরে আলোচনায় এলেও এ বিষয়ে উল্লেখ করার মতো কোনো অগ্রগতি লক্ষ করা যাচ্ছে না।

বর্ষার পানি ধরে রাখার পরিবর্তে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে চাষাবাদ অব্যাহত রাখলে যে বির্পযয় সৃষ্টি হবে, তাও বহুল আলোচিত। কাজেই এ ধরনের উদ্যোগের পাশাপাশি বৃষ্টির পানি ধরে রাখার অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নের যেসব সম্ভাবনা রয়েছে তা কাজে লাগাতে হবে। নয়তো আগামীতে যে বির্পযয় সৃষ্টি হবে তা মোকাবিলা করা কঠিন হতে পারে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

তিস্তা সেচ প্রকল্প সম্প্রসারণ: বৃষ্টির পানি ধরে রাখার বড় উদ্যোগ নিতে হবে

আপডেট টাইম : ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী ২০২১

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বিভিন্ন প্রকল্প প্রস্তাবে অতিরিক্ত অর্থ প্রাক্কলন ও উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিদেশ ভ্রমণকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞতার জন্য বিদেশ ভ্রমণকে প্রকল্প প্রস্তাবে এমনভাবে যুক্ত করা হয় যেন এ ধরনের ভ্রমণ অনিবার্য। এমন উচ্চাভিলাষী প্রস্তাব প্রায়ই প্রশ্নের মুখে পড়ে। গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ১০ প্রশ্নের মুখে পড়েছে ‘তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার সম্প্রসারণ’ প্রকল্প।

এক্ষেত্রে বিভিন্ন খাতে ব্যয় প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের উদ্দেশ্যও যথাযথ হয়নি বলে মনে করছে পরিকল্পনা কমিশন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) এক সভায় বিদেশ ভ্রমণসহ পাঁচ খাতে ব্যয় বাদ দেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে। জানা গেছে, ‘তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।

যথাযথ প্রক্রিয়ার পর একনেক বৈঠকে অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। আশা করা হচ্ছে, প্রকল্পের আওতায় এক লাখ হেক্টর জমিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেচের পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এতে খাদ্যশস্যের যে পরিমাণ উৎপাদন বাড়বে তার বাজারমূল্য কম নয়। প্রস্তাবিত প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত বেশ কিছু ব্যয়বহুল প্রস্তাবসহ জলযান কেনার প্রস্তাব বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া বেশকিছু খাতে ব্যয় কমানোর সুপারিশও করা হয়েছে। প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত সামাজিক বনায়নের বিষয়টি বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে। তবে বৃক্ষরোপণের পর তা সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলবে না, যা বলাই বাহুল্য। উল্লিখিত প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে খাদ্যশস্যের ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

এমন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে তিস্তার ওপর নির্মিত বাঁধের (ব্যারাজ) ভাটি অঞ্চলের নদী-তীরবর্তী এলাকার মানুষ কতটা উপকৃত হবে, এমন প্রশ্নও দেখা দেবে। দেশের অনেক নদীতে শুষ্ক মৌসুমে ধান চাষ করার খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে আসে। অথচ এসব নদ-নদী-খাল-জলাশয় খনন করে বর্ষার পানি ধরে রাখার বিষয়টি বহুদিন ধরে আলোচনায় এলেও এ বিষয়ে উল্লেখ করার মতো কোনো অগ্রগতি লক্ষ করা যাচ্ছে না।

বর্ষার পানি ধরে রাখার পরিবর্তে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে চাষাবাদ অব্যাহত রাখলে যে বির্পযয় সৃষ্টি হবে, তাও বহুল আলোচিত। কাজেই এ ধরনের উদ্যোগের পাশাপাশি বৃষ্টির পানি ধরে রাখার অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নের যেসব সম্ভাবনা রয়েছে তা কাজে লাগাতে হবে। নয়তো আগামীতে যে বির্পযয় সৃষ্টি হবে তা মোকাবিলা করা কঠিন হতে পারে।