বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ এলাকাটি সিলেট অর্থনৈতিক অঞ্চল। জমির পরিমাণ ৩৫২ একর। বিনিয়োগ ৫২ হাজার কোটি টাকা। কর্মসংস্থান ৪৪ হাজার। মৌলভীবাজারের প্রত্যন্ত গ্রাম শেরপুরে গড়ে উঠছে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল। এখানে যে পণ্য উৎপাদিত হবে তার প্রায় পুরোটাই বিদেশে রফতানি করা হবে। রফতানি থেকে প্রতি বছর বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পরিমাণ হবে ৩৫২ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।
অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। শিল্প স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যেই ছয়টি শিল্প গ্রুপকে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারা এখানে ২৫টি কারখানা প্রতিষ্ঠা করবে; যার বিনিয়োগ মূল্য ১২ হাজার কোটি টাকা। পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি সালের ডিসেম্বর থেকে শিল্প স্থাপনের কাজ শুরু হয়ে আগামী বছরের জুন নাগাদ উৎপাদন শুরু হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বেজা) কর্তৃপক্ষ।
দেশে এ রকম যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে উন্নয়ন সড়কে হেঁটে যাচ্ছে বাংলাদেশ; তাকে ইতিবাচক বলে আখ্যায়িত করেছেন দেশের অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, অনেকদিন পরে হলেও দেশ একটি গঠনমূলক মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে; যা সাধারণ মানুষকে একটি স্বপ্নরাজ্যে প্রবেশের সুযোগ করে দিয়েছে। তাদের ভাবনায় এখন নতুন ফুলের গন্ধ। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে বেরিয়ে আসার স্বপ্ন।
এ মুহূর্তে বাংলাদেশে কর্মক্ষম বেকারের সংখ্যা প্রায় চার কোটি। বিভিন্ন সময়ে রাজনীতিকদের মুখ থেকে অনেক আশ্বাসবাণী শোনা গেছে। কিন্তু আশ্বাস কখনোই বিশ্বাসের কড়িডরে পৌঁছাতে পারেনি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেয় আশ্বাসবাণীর প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন। যার প্রতিধ্বনি এখন প্রতিধ্বনিত হচ্ছে বাংলাদেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতিতে। তলাবিহীন ঝুড়ি এখন আর তলাবিহীন পর্যায়ে নেই। কিছুদিনের মধ্যে সেই দেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে।
এখানে একটি কথা না বললেই নয় যে, ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে একযোগে উৎপাদন শুরু হলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন আসবে, তা অনেক দেশের জন্য ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। বাংলাদেশ তার প্রবৃদ্ধিকে নিয়ে যাবে দুই অঙ্কের ওপরে।
আমরা আশা করব, অন্যান্য প্রকল্পের মতো এই প্রকল্প যেন কচ্ছপের গতি ধারণ না করে। গুরুত্ব বিবেচনায় এ প্রকল্প অগ্রাধিকার পেতেই পারে। বাংলাদেশের সোনালি ভবিষ্যতের জন্য সরকারপ্রধান নিশ্চয়ই এ প্রকল্পের প্রতি বিশেষভাবে যত্নবান হবেন- এটাই ১৬ কোটি মানুষের প্রত্যাশা।